Bangla Golpo: বিষাদ আজ মন ছুঁয়েছে
(দ্বিতীয় পর্ব)
.'আমাদের এভাবে দেখা করাটা বোধহয় ঠিক হয়নি।'
শাহেদ মেসেজটার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থাকলো। তারপর ফোনটা রেখে উঠে দাঁড়ালো। মেয়েটা মেসেজ দিচ্ছে বারবার, অথচ তার রিপ্লাই করা হচ্ছে না৷ সত্যি বলতে শাহেদের রিপ্লাই করতে ইচ্ছে হচ্ছে না৷ একদমই না। তার কেমন জানি লাগছে। অস্থির, হাঁসফাস লাগছে। সে চারদিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো। সমস্ত ঘরটাই কী ভীষণ নীরব৷ যেন এই ঘরের বায়ুমণ্ডলে জগতের সকল নীরবতা এসে ভর করেছে৷ কোথাও একটুখানি ফাঁকা নেই৷ সমস্তই নীরব। অথচ কয়েক দিন আগেও এই ঘরটা কী প্রাণবন্ত ছিল। বাবুটা বিছানায় শুয়ে থেকে হাত নাড়াতো। মাঝে মাঝে নিজ থেকেই উঠে বসতো৷ দাঁড়াতো। দৌড় দিতে চাইতো। বাবুর পাশেই এক ঝাক চুল মেলে শুয়ে থাকতো লিলি। সে মাঝে মাঝে বাবুকে দেখতো। আবার ফাঁক করে শাহেদের দিকে তাকিয়ে থাকতো৷ কী ঘোর লাগা সেই দৃষ্টি। মনে হতেই শাহেদের ভেতরটা খানিক আদ্র হয়ে উঠলো। সে মনের ভেতর খানিকটা দূর্বলতা অনুভব করলো। হঠাৎই যেন এক ঝাঁক শূন্যতা আঁকড়ে ধরলো তাকে। সে বুকের ভেতর কেমন একটা যন্ত্রণা অনুভব করলো। কেমন অসহ্যকর যন্ত্রণা। চাপা একটা বেদনা সমস্ত দেহে যেন যন্ত্রণা বিলিয়ে দিচ্ছে।
শাহেদ ভাবলো লিলি কি সত্যিই ফিরবে না? আর ফিরে আসবে না এই ঘরে?
ফোন বেজে উঠলো৷ শাহেদ দ্রুত ফোন হাতে নিলো৷ তার মনের মাঝে এখনও কেমন জানি একটা আশা বাসা বেঁধে আছে, লিলি ফোন দিবে৷ ফোন দিয়ে তার কথা জানতে চাইবে। একান্তই তার গভীরের কথা৷ স্ক্রিনে তমার নাম। শাহেদের গলা দিয়ে ভারী দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো।
-হ্যালো?
ওপাশ থেকে তমা ফোঁপাতে ফোপাঁতে বলল,
-ভাইয়া?
-তমা তুমি কাঁদছো কেন?
-ভাইয়া? আপনার বউ আমার সাথে খুব বাজে ব্যবহার করেছে।
-আচ্ছা? কী বাজে ব্যবহার করেছে শুনি?
-শুনলে আপনি বিশ্বাস করবেন না ভাইয়া৷ আপু আমার রুমে আপনার বই দেখতেই সেটা বাইরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে৷ বলেছে আমি যেন আর কখনই আপনার বই না পড়ি৷ তখন আমার যা কান্না পেয়েছিল না! বলে বোঝাতে পারবো না আপনাকে। তাও আমি বইটা খুঁজতে নিচে গিয়েছিলাম। কিন্তু পাইনি। এদিকে অন্ধকারও হয়ে এসেছিল। তবুও খুঁজলাম। কিন্তু কোথাও পাইনি।
এতটুকু বলে থামলো মেয়েটা৷ আবার বলল,
-জানেন, আমি একটা ইন্টারেস্টিং কাহিনীতে এসেছিলাম। অনেক দিন পর আবীর মেঘলার সাথে দেখা করতে যায়। আচ্ছা ভাইয়া ওদের কি আবার দেখা হয়? নাকি আবীর সেই লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে চলে আসে?
শাহেদ হাসলো খানিক। বলল,
-তুমি আর তোমার বোন, দু'জনেই কতো ভীন্ন। আমার তো মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়, তোমরা আসলেই এক রক্তের কী না৷
-ধুর! এসব বাদ দিন তো ভাইয়া৷ আমাকে এইটুকু বলেন না প্লীজ৷ দেখা হয় ওদের?
-বলবো? নাকি বই পড়বে? আমার মনে হয় বই থেকে পড়াই ভালো হবে৷ কী বলো?
তমা চট করেই বলে উঠলো,
-ভাইয়া? আপনি আমাকে বইটা ম্যানেজ করে দিতে পারবেন? এখনই পারবেন? দিলে আমি খুব খুব খুশি হবো।
-তমা, এখন লাগবে?
-জি ভাইয়া৷ এখনই লাগবে৷ আপনি যদি আমাকে বইটা এনে দেন তাহলে আমি আপনাকে একটা গিফট দিবো।
-গিফট? কী গিফট শুনি?
-সারপ্রাইজ গিফট! আগে বইটা নিয়ে আসুন৷ তারপর দেখতে পাবেন৷
শাহেদ হাসলো। কিছু বলল না আর। ফোনটা পকেটে রেখে নিজের ব্যক্তিগত লাইব্রেরীতে গেল।
বেল বেজে উঠলো। তমা প্রায় দৌড়ে গিয়ে দরজাটা খুলে দিলো।
-ভাইয়া এসেছেন?
শাহেদ হাসলো। কিছু বলল না।
-ভেতরে আসুন। আরেহ, গিফট পেপার মোড়ানোর কী প্রয়োজন ছিল?
শাহেদ হাসি মুখে বলল,
-গিফট বলে কথা! এভাবে থোড়াই না দেওয়া যায়!
তমা খুশির সীমা থাকলো না। সে বইটা হাতে নিয়ে এক গাল হেসে বলল,
-থ্যাংকিউ সো মাচ ভাইয়া! বিশ্বাস করবেন না, আমার মনে হচ্ছিল, আমি দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো। এতোটা আগ্রহ জেগে যাবে ভাবিনি। উফ! বাঁচালেন আমায়!
শাহেদ হাসলো৷ বলল,
-আমার সারপ্রাইজ?
-একটু অপেক্ষা করতে হবে৷ আগে ডিনারটা সেরে নিতে হবে৷
শাহেদ অবাক হয়ে তাকালো তমার দিকে। বলল,
-ডিনার? তোমাদের ঘরে তো আমার খাওয়া দাওয়া এলাউ না৷ পানি পর্যন্ত না। গৃহের বড় কন্যার আদেশ!
তমা মুচকি হাসলো। বলল,
-বড় কন্যার আদেশ অনুযায়ী আপনার তো এই বাসাতেও আসা নিষেধ। তাহলে?
-সেটা তো গৃহের ছোট কন্যার জন্যে আসা!
-আসলেই কি তাই? আমার জন্যেই আসা?
শাহেদ খানিকটা হোচট খেয়ে গেল যেন। কী বলবে ভেবে পেল না। তমা মুচকি হেসে ব্যাপারটা সামলে নিলো। বলল,
-আপনি আজ আমার মেহমান৷ সো নো টেনশন ব্রাদার-ইন-ল!
শাহেদ অপ্রস্তুত হয়ে হাসলো। তমা বড় হয়ে গিয়েছে ভেবেছে। কিন্তু এতোটা বড় হয়েছে বলে ভাবেনি সে। মেয়েটা কি সুন্দর করে সিচুয়েশনটা সামলে নিলো! তমা ভেতরের ঘরে গেল। ঠিক তখনই লিলি বেরিয়ে এলো। শাহেদকে বসার ঘরে দেখতেই অবাক হয়ে তাকালো।
শাহেদ লিলিকে দেখতেই উঠে দাঁড়ালো। আচমকা লিলির সাথে এভাবে দেখা হয়ে যাবে ভাবেনি সে। সে খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে তাকিয়ে থাকলো লিলির দিকে। মেয়েটা শুকিয়ে গিয়েছে অনেক৷ চেহারা কেমন ফ্যাকাসে ফ্যাকাসে লাগছে। লিলি এগিয়ে এসে বলল,
-ডিভোর্স পেপার এনোছো নাকি?
শাহেদের ভ্রু কুচকে এলো। এই মেয়ে বলে কী? লিলি এগিয়ে এসে সোফায় বসলো। বলল,
-কই দেখি পেপার দাও তো।
শাহেদ অবাক স্বরে বলল,
-লিলি, কী সব বলছো তুমি? কিসের ডিভোর্সের পেপার?
-মানে? আমি না তোমাকে বলেছিলাম পেপার রেডি করতে?
-বলেছো। কিন্তু...
-কী কিন্তু? কই? কিছুই তো নিয়ে আসোনি৷ পেপার রেডি করা ছাড়া এই বাড়িতে আসতে নিষেধ করেছিলাম তোমাকে। তাও কেন এলে?
-তোমাদের জন্যে চিন্তা হচ্ছিল আমার লিলি।
-চিন্তা? আমাদের জন্যে চিন্তা? এটা কীভাবে সম্ভব? ও মাই গড! মহান একজন লেখক আমাদের নিয়ে চিন্তা করছেন এটা ভাবা যায়?
-লিলি, তুমি ব্যাপারটাকে বেশি লাইটলি নিয়ে নিচ্ছো। তুমি যা ভাবছো তেমন কিছুই না৷ বিলিভ মি প্লীজ!
-তুমি অন্য মেয়েদের হাত ধরে ধরে বেড়াবে, আর আমাকে বলবে আমি লাইটলি যেন না নেই? এতোটা বোকা আমি নই। আর শোনো, তোমার এসব ফালতু ড্রামা বন্ধ করো প্লীজ। এখান থেকে চলে যাও৷ তোমাকে যেন আর কখনই এখানে না দেখি৷
তমা বসার ঘরে জোরে কথা বলার শব্দ শুনে এগিয়ে এলো। এসেই দেখলো তার বোন আর দুলাভাই কথা বলছে৷ সে ভাবলো এদের বিরক্ত না করাই ভালো৷ অনেক সময় ঝগড়া ঝগড়ায় অনেকের মিল হয়ে যায়৷ তমা ভাবলো সে চলে যাবে৷ কিন্তু গেল না৷ তার মনে হলো ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে৷ তার বোন বেশি কথা বলছে। বেশি বকাঝকা করছে। দুলাভাই প্রথমে যাও কথা বলছিল এখন কিছুই বলতে পারছে না৷ আপু তাকে বলার সুযোগই দিচ্ছে না৷ তমার মনে মনে ভয় হলো। সে ভাবলো এই মূহুর্তেই খারাপ কিছু হবে৷ খুবই খারাপ কিছু৷ সে দ্রুত এগিয়ে এলো,
-কী ব্যাপার আপু? এমন চিল্লাচ্ছো কেন?
লিলি রক্তচক্ষু নিয়ে তমার দিকে তাকালো৷ রাগে তার সমস্ত চেহারা কেমন লালছে হয়ে আছে৷ তমা এবার সত্যি সত্যিই ঘাবড়ে গেল। লিলি খানিকটা চড়া স্বরে বলল,
-একে এখানে কে ডেকেছে? এখানে আসতে বলছে কে?
শাহেদ উঠে এলো৷ বলল,
-আমি নিজ থেকেই এসেছি। তুমি প্লিজ ওর সাথে এভাবে কথা বলবে না।
লিলির স্বর এবার আরেকটু চওড়া হলো। বলল,
-এই? চুপ? একদম চুপ। একটা কথাও বলবে না৷ এটা আমার আর ওর মাঝের আলাপ। এখানে তুমি একটা কথাও বলতে পারবে না৷ স্টপ ইউর মাউথ এন্ড গেট লস্ট ফ্রম হেয়ার৷
শাহেদ গেল না। সে দাঁড়িয়ে থাকলো। লিলি তমার দিকে এগিয়ে গেল৷ তমা খানিকটা পিছিয়ে গেল। সে খানিকটা ভয় পেয়ে গিয়েছে। নিজের বোনকে কখনই এমন রূপে দেখেনি৷ সে সব সময়ই ভেবেছে তার বোন শান্ত ধরনের মেয়ে৷ ঝগড়াঝাটি বিশেষ পছন্দ না টাইপের। যে তাকে খুব ভালোবাসে৷ অথচ আজ তেমন কিছুই মনে হচ্ছে না৷ লিলি বলল,
-কী ব্যাপার? জবাব দে?
তমা কাঁপাকাঁপা স্বরে বলল,
-আমি উনাকে ডেকেছি আপু৷
-কেন ডেকেছিস? তোকে না বলেছি ওর ছায়াও যেন এই ঘরে না পড়ে?
-আপু, তুমি আমার সাথে এভাবে কথা বলছো কেন? আমার ভয় লাগছে!
তমা যেন কান্না করে দিল। তার স্বরটা নিচে নেমে এলো। তার চোখ টলমল করতে থাকলো। শাহেদ কিছু বলে উঠার আগেই লিলি বলল,
-তোর সাথে এভাবে কথা বলবো না তো কীভাবে বলবো? তোকে কতো বার করে বললাম ওকে এই ঘরে ডাকবি না৷ তাও কেন ডাকলি?
-আমার ওই বইটা লাগতো৷ তাই ভাইয়াকে নিয়ে নিয়ে আসতে বলেছি৷
-ভাইয়া মানে? শোন, ওকে আর কখনই ভাইয়া বলে ডাকবি না৷ ও এই শব্দটার লায়েক না৷ আর তোকে না ওর বই হাতে নিতেও নিষেধ করেছিলাম? বল করেছিলাম কি না?
তমা ভয়ে ভয়ে বলল,
-আমি বুঝতে পারছি না আপু। সারারাত তুমি কান্না করো। ভাইয়া নেই বলে তোমার দু'চোখে ঘুম নেই৷ অথচ উনি এলেই তুমি কেমন জানি হয়ে যাও। অদ্ভুত পাগলামি করো। এমন পাগলামি কেন করো তুমি?
লিলি ভ্রু কুচকে তাকালো তমার দিকে। তার কপাল কুচকে গেল মূহুর্তে। নিঃশ্বাস নেয়ার শব্দটা শাহেদ স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে৷ রাগে মেয়েটার শরীর কাঁপছে যেন৷ লিলি বলল,
-আমি যে সারারাত কাঁদি সেটা তোকে বলল কে?
-আমি শুনেছি অনেকবার৷
-কীভাবে শুনেছিস? দরজায় কান পেতে?
তমা মাথা নেড়ে সায় দিলো। ঠিক তখনই লিলি ওকে একটা চড় মারলো। শাহেদ হতভম্ব হয়ে তাকালো লিলির দিকে। সে বিশ্বাস করতে পারছে না যে লিলি তমাকে চড় মেরেছে৷ তার আদরের এক মাত্র বোনকে? তমা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলো। মেয়েটা কাঁদছে৷ তার গাল বেয়ে কষ্টের নদী বয়ে যাচ্ছে৷ শাহেদ তমার পাশে গিয়ে তার কাঁধে হাত রাখলো। লিলির দিকে তাকিয়ে বলল,
-লিলি তুমি কি পাগল হয়ে গিয়েছো? তোমার সমস্যা আমার সাথে৷ যতো রাগ আমার উপর। সেটা তুমি আমার উপর ঝাড়বে। ওর উপর কেন? ওর কি দোষ? তুমি ভুলে যেও না ও তোমার ছোট বোন।
-ছোট বোন বলেই মেরেছি। ওকে শাসন করার অধিকার আমার আছে৷ তুমি ওর কাঁধ থেকে হাত সরাও৷ তোমাকে তো চলে যেতে বললাম। গেলে না কেন? নাকি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করতে হবে?
-লিলি তোমার হয়েছে কী? তুমি...
শাহেদ কিছু বলতে পারলো না আর। তার আগেই লিলি তার হাত ধরে টান দিলো। টেনে নিয়ে তাকে বাসা থেকে বের করে দিলো। বলল,
-এটা ভেবে খুশি হইয়ো না যে আমি তোমার জন্যে কেঁদেছি৷ তাহলে তুমি ভুল ভাববে। আমি কেঁদেছি একমাত্র আমার কপালের জন্যে৷ বাবার কথা অমান্য করে একজন ভুল মানুষের হাত ধরেছি। সে জন্যে কেঁদেছি আমি৷ আমি চাইলেই আরো বিলাশবহুল জীবনযাপন করতে পারতাম। আমার এখন মনে হচ্ছে সেটা না চেয়ে আমি কঠিন ভুল করেছি৷
কথাটা বলেই সে চেঁচিয়ে বলল,
-দারোয়ান চাচা? ওকে যাওয়ার রাস্তাটা দেখিয়ে দিন।
কথাটা বলে আর অপেক্ষা করলো না সে। ঠাস করে দরজাটা লাগিয়ে দিলো৷ তারপর ধীরে ধীরে তমার দিকে এগিয়ে গেল। বলল,
-তমা, বেশি বেড়ে গিয়েছিস তুই। ছোটদের এতো বেশি বাড়াবাড়ি করা উচিৎ না৷ আদর করে করে একদম মাথায় তুলে ফেলেছি৷
কথাটা বলে লিলি ভেতরের ঘরে চলে এলো৷ তমা পেছন থেকেই বলল,
-তুমি এমনটা কেন করলে আপু?
কথাটা বলার পরই তমা ভেতরের ঘরে এলো। আবার বলল,
-আমি উনার জন্যে খাবার গরম করেছিলাম। কতো প্ল্যান করেছিলাম। অথচ তুমি কি না সেই প্ল্যানে পানি ঢেলে দিলে? এমনট কেন করলে আপু?
লিলি ডাইনিং টেবিলের দিকে তাকালো। বলল,
-খাবার গুলো তুই সাজিয়েছিস? ওর জন্যে? ওই চরত্রহীন ছেলেটার জন্যে?
-স্টপ আপু৷ স্টপ! আর একটা কথাও বলবে না তুমি। উনার সম্পর্কে আর একটা বাজে কথাও বলবে না৷
কথাটা বলেই তমা নিজের রুমে চলে গেল। লিলিকে কিছু বলার সুযোগও দিলো৷ রুমে ঢুকেই দরজাটা জোরে লাগিয়ে দিলো। লিলি ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকলো। সেই যায়গাতেই দাঁড়িয়ে থাকলো সে৷ অল্প কিছু পরেই তার চোখ ভিজে এলো৷ সে ওই জায়গা থেকে নড়তে পারলো না আর। অন্যদিকে বাবুর ঘুম ভেঙ্গে যে সে কান্না করে খুন হয়ে যাচ্ছে সেদিকে তার কোনো খবরই নেই৷
শাহেদ আনমনে হাঁটতে থাকলো৷ তার মনের ভেতর কেবল একটু আগের ঘটে যাওয়া ঘটনাটা ঘুরপাক খাচ্ছে৷ বারবার সেই একই কথা গুলো যেন তার মস্তিষ্কে রিপিট হচ্ছে৷ বড় যন্ত্রণা হচ্ছে মনের ভেতর৷
-স্যার, ভালো আছেন?
শাহেদ ভ্রু কুচকে তাকালো। সামনের এই যুবক বয়সি ছেলেটাকে সে চিনে বলে মনে হলো না। ছেলেটা এক গাল হেসে তাকিয়ে আছে তার দিকে। যেন হাতে চাঁদ পেয়েছে সে। শাহেদ অবাক হলো। ছেলেটা হাসি মুখে বলল,
-স্যার,আমি আপনার লেখার অনেক বড় ভক্ত৷ অনেক। অনেক। আপনার একটা অটোগ্রাফ পাওয়া যাবে?
শাহেদ বেশ অভিভূত হলো। এই শহরের যে দু'একজন তার অটোগ্রাফ চায় তাদের বড় ভালো লাগে ওর। আপন আপন লাগে। তার আপন লোকের বড়ই অভাব। শাহেদ হাসলো। অমায়িক, প্রাণবন্ত হাসি৷ দেখলে মনেই হয় না তার ভেতর একটা ঝড় বয়ে যাচ্ছে৷ খুবই মারাত্মক একটা ঝড়৷
.
চলবে...
.
ভুলত্রুটি মার্জনীয়
-তাসফি আহমেদ।
Bangla Golpo-Bangla New
Golpo-Bangla Choto Golpo-Bangla Love Story-Bangla Valobasar Golpo-বাংলা গল্প
0 মন্তব্যসমূহ