Bangla Golpo: গ্রিন ম্যান

বাংলা গল্প| Bangla Love Stories| Bangla Choto Golpo | Bangla Valobashar Golpo| Bangla Golpo.


Bangla Golpo: গ্রিন ম্যান

তাসফি আহমেদ

(প্রথম পর্ব)
.
ধপধপে সাদা রকেট হতে হুট করেই একটা ছোট্ট নভোযান বিভক্ত হয়ে গেল।দুরন্ত গতিতে ছুটে চলল নতুন আবিষ্কৃত হওয়া গ্রহটার দিকে।যাকে সম্প্রতিতে নাসা হতে 'দ্য গ্রীন ওয়ার্ল্ড' নাম করন করা হয়েছে।তার দিকেই এগিয়ে চলছে 'এ্যানা-১' নামক ছোট্ট নভোজানটি।যার ভিতর চারজন মানব রয়েছে।জামাল সাহেব যিনি সম্প্রতিতে বাংলাদেশ নামক ছোট্ট দেশটাকে পৃথিবীর সামনে তুলে ধরেছেন তার অসাধারণ সব কর্ম দিয়ে।তার সাম্প্রতিক আবিষ্কার গুলো তাকে সাফল্যের উচ্চ চূড়ায় নিয়ে গেছে।তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞানী যিনি নাসা নামক এত বড় গবেষণা কেন্দ্রে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আর তার সাথে আছে তার তিন সহকর্মী বা ছাত্র। যারাও অত্যন্ত দক্ষ।মেধাবিও বটে।
.
জামাল সাহেব ছোট্ট নভোযানটি থেকে খুব সাবধানে নামলেন। তার পিছন পিছন আসতে থাকল তার প্রিয় তিন সহকর্মী।নাম মাসুদ,মহি ও সাদিক।তারা উনার ল্যাবরেটরিতে কাজ করে।খুব বিশ্বস্ত।দক্ষও বটে।এযাবত প্রতিটি কাজ তারা নির্ভুল ভাবে করেছে।এজন্যে জামাল সাহেবও ওদের খুব পছন্দ করেন। ওরাও জামাল সাহেবের সাথে কাজ করে বেশ খুশি। ওরা তাদের স্যারকে অনুকরণ করে প্রথম বারের মত কোন গ্রহে পাঁ দিল। এতে অবশ্য তাদের মাঝে বেশ উত্তেজনা কাজ করছে। খুশিতে গদগদ অবস্থা।
ছোট্ট নভোযানটি যেখানে ল্যান্ড করেছে সেখানে খুব একটা গাছপালা নেই। তার থেকে বেশ কিছুটা দূরে গাছ দেখা যাচ্ছে।বড় বড় গাছ।তারা সেদিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। কিছুদূর যেতেই জামাল সাহেব হুট করে মাটিতে বসে পড়ল।তার সহকর্মীরা কিছুটা বিব্রত হল।স্যারের এভাবে বসে যাওয়ার কারনটা ঠিক বুঝতে পারে নি।কারনটা বুঝতে পেরে অবশ্য বিব্রত ভাবটা কেটে গিয়েছে। জামাল সাহেব মাটিতে বসেই কিছু সময় মাটি গুলোকে ভালো ভাবে পরক্ষ করলেন।উনার ভাব দেখে বুঝা যাচ্ছে তিনি এ রকম মাটি কখনই দেখেন নি।অদ্ভুত মাটি। এই মাটি কাদাটে নয়। এর রঙ ভিন্ন|অনেকটা হলুদ কালারের। জামাল সাহেব কিছু সময় সেদিকে তাকিয়ে থাকলেন কিছু সময়। তারপর 'মাসুদ' বলে ডাক দিলেন। পিছন থেকে তার সহকর্মি মাসুদ এগিয়ে এল|তিনি বললেন,
"ব্যগটা বের কর।"
ছেলেটা বাধ্য ছেলের মত একটা পলিথিন ব্যাগ বের করল। তারপর জামাল সাহেবের দিকে ব্যাগটা এগিয়ে দিল। তিনি কয়েক মুষ্ঠি মাটি ব্যাগে পুরে নিলেন।তারপর হাত ঝাড়িয়ে উঠতে গিয়েই তিনি থমকে দাঁড়ালেন। মাটিতে কিছু একটা লক্ষ্য করলেন।সেটা দেখে তিনি অনেকটাই চমকে উঠলেন। তবে উনাকে দেখে মনে হচ্ছে উনি জানেন এমন কিছুর দেখা এখানে মিলবে।তাই তিনি ততটা বিচলিত হন নি।'মহি' কে ডাক দিতেই সে এগিয়ে এল।জামাল সাহেব বললেন,
"এই ছাপটার কয়েকটা ছবি তুলো তো।"
মহি ছবি তুলতে গিয়ে কিছুটা হকচকিয়ে গেল।হয়ত ব্যাপারটা খুব সহজ ভাবে নিতে পারে নি।ভয় ভয় চোখে স্যারের দিকে তাকিয়ে বলল,
"স্যার এটা কি?"
"পাঁয়ের ছাপ "
মহি কিছু বলল না।চোখ বড় বড় করে জামাল সাহেবের দিকে তাকিয়ে থাকল।জালাম সাহেব বুঝতে পারলেন ব্যাপারটা।বললনে,
"কি ব্যাপার! ভয় পেলে নাকি?"
"ভয় না পাওয়ার তো কোন কারন নেই স্যার।এইখানে কারো পাঁয়ের ছাপ! এটা তো বিশ্বাস করা যায় না।"
মাসুদ এবং সাদিক এগিয়ে এল।তারা ছাপটা দেখে কিছুটা ভড়কে গেল।কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে স্যারের দিকে তাকালো।জামাল সাহেব পরিস্থিতি সামাল দিতে মৃদু হাসলেন।তারপর বললেন,
"আমি আগেও লক্ষ্য করেছি ব্যাপারটা।ঠিক ক্লিয়ার দেখি নি তখন।তবে এখানে যে প্রানের সঞ্চার রয়েছে সেটা ঠিকই উপলব্ধি করতে পেরেছি।কম্পিটার,টেলিস্কোপ সব কিছু দিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করে দেই। আমার তখনও বিশ্বাস হয় নি। শুধু কিছু একটার নাড়াচাড়া দেখতে পেয়েছিলাম। স্পষ্ট দেখতে পাই নি।এখানে এসে আমার বিশ্বাস হল।"
জামাল সাহেবের কথা শেষ হতেই সাদিক বলে উঠল,
"তারমানে স্যার 'এলিয়েন' কিছু একটা সত্যিই আছে?"
"বলতে পার তাই।"
ওরা তিনজনই কথাটা শুনে স্তম্ভিত হয়ে জামাল সাহেবের দিকে তাকিয়ে রইল।ওরা যেন এটা কোন ভাবেই বিশ্বাস করতে পারছে না।জামাল সাহেব তাদের এ অবস্থা দেখে মনে মনে হাসলেন।ভাবলেন, "এরা এত ভিতু! এ আমার আগে জানা ছিল না।"
জামাল সাহেব ও তার সহকর্মীরা অনেকটা পথ চলে এসেছে।বলা যায় জঙ্গলের ভেতরেই চলে এসেছে।সহকর্মীরা চারপাশ চোখ বুলিয়ে দেখছে।জিবনে হয়ত এত সুন্দর কিছু আগে দেখে নি।কি সুন্দর সন্নিবেশিত গাছ।নানা রঙের ফুল। গাছেরও ভিন্ন ধরন রয়েছে।জামাল সাহেবরা অনেকক্ষন ধরে একটা জিনিস লক্ষ্য করল যে তাদের অক্সিজেন বতলের প্রয়োজন হচ্ছে না।অক্সিজেন বতল ছাড়াই তারা খুব সুন্দর ভাবে শ্বাস নিতে পারছে।একটু কষ্টও হচ্ছে না।খামখা এত ভার বহন করা বোকামি।তাই তারা বতল গুলো খুলে রেখেছে।পরে যাওয়ার সময় নিয়ে নেবে।জামাল সাহেব কিছুদুর যেতেই একটা গাছে লাল রঙ লাগিয়ে দিচ্ছেন।যাতে ফিরার সময় তাদের কষ্ট না হয়।জামাল সাহেব চলছেন আর তার পিছনে রয়েছে তার তিন সহকর্মী।সহকর্মীরা কেবল চারপাশ দেখতেই ব্যস্ত। হঠাৎ-ই জামাল সাহেব অদ্ভুত কিছু ফুল গাছ দেখতে পেলেন।একটু বড়।ঝোপের মত।ফুলের পাপড়ির উপরের অংশ কড়া লাল রঙের।কিন্তু পিছনের অংশ ধপধপে সাদা।এমন ফুল তারা কেউই আগে দেখে নি।তারা বিস্মিত হয়ে সেদিকে তাকিয়ে আছে।তারা যেন কোন স্বপ্নের ভুবনে আছে।চারিদিকের এত মনোরম দৃশ্য সত্যিই তাদের মহিত করছে।তার উপর এমন আশ্চর্য রকমের ফুল গাছ দেখে যেন তাদের বিস্ময়ের সীমা রইল না।এমন সময় তারা কিছু একটার আওয়াজ পেল।যেন কেউ একজন এদিকে এগিয়ে আসছে।খচ্ খচ্ শব্দ হচ্ছে।তারা চারজনই চুপ হয়ে গেলেন।মহি, মাসুদ আর সাদিকের মুখ দেখে মনে হচ্ছে তারা যেকোন মূহুর্তে পালাতে প্রস্তুত। ভয়ে তাদের মুখখানা কালো হয়ে আছে।ঘেমে একাকার। কিন্তু জামাল সাহেবের এসবের দিকে খেয়াল নেই।মুখে চিন্তার ছাপটাও নেই।নির্বিকার ভঙ্গিতে শব্দের উৎসের দিকে তাকিয়ে আছেন।শব্দটা আরেকটু কাছে চলে এল।উনি এবং সহকর্মীরা ফুল গাছটার আড়ালে লুকিয়ে গেলেন।মাসুদ ফিস্ ফিস্ করে বলল,
"স্যার! চলেন পালাই! তা না হলে এরা আমাদের মেরে ফেলবে।কারন আমরা তাদের এলাকায় প্রবেশ করেছি। তাও আবার বিনা অনুমতিতে।আমাদের ধরতে পেলে আস্ত রাখবে না স্যার।"
জামাল সাহেব কিছু সময় মাসুদের দিকে তাকিয়ে রইলেন।মাসুদ স্যারের এভাবে তাকিয়ে থাকাতে অস্বস্তি বোধ করছে।জামাল সাহেব কিছু বললেন না আর।মাসুদের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলেন।
শব্দের উৎসের দিকে তাকালেন তিনি।শব্দটা খুব কাছে চলে এল।ফুল গাছটার আড়াল থেকে তারা স্পষ্ট দেখতে পেল সবুজ রঙের কোন এক জলজ্যান্ত প্রানিকে।নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছে না তারা।এলিয়েনদের কথা শুনেই এসেছে এত দিন।দেখা হয় নি কখনও।কিন্তু আজ সেটা চোখের সামনে। একেবারে হাত দশেক দূরে।সত্যিই তারা এটা বিশ্বাস করতেই পারছে না।তারা কিছু সময় তাকিয়ে রইল অদ্ভুত প্রানিটার দিকে।সে নাক দিয়ে কিছু একটার গ্রান নেওয়ার চেষ্টা করছে।খুব সম্ভব জামাল সাহেবদের অবস্থান নির্ণয় করার চেষ্টা করছে।প্রানিটা অনেকটাই মানুষের মত।কিন্তু গায়ের রঙ ঘন সবুজ।কান দুটি বেশ বড় বড়।চোখ দুটোর ভেতরে যেন নীল কিছু একটা জ্বলছে। নাকটা মানুষের মত না।শুধু দুটো ছিদ্র দেখা যাচ্ছে। ঠোট গুলো অনেকটাই মোটা।কালো হয়ে আছে।ওরা গাছের আড়াল থেকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে অদ্ভুত প্রানিটার দিকে ।প্রানিটা আরেকটু এগিয়ে এল।এগিয়ে এসেই অদ্ভুত রকম ভাবে উপরের দিকে তাকিয়ে তিব্র ভাবে একটা চিৎকার দিল।মনে হচ্ছে কাউকে ঢাকছে।সে চিৎকার দিয়েই ফুল গাছটার দিকে তাকাল।যেন ঠিকই বুঝতে পেরেছে ওটার আড়ালে কিছু একটা আছে।যারা বিনা অনুমতিতে তাদের রাজ্যে পদার্পণ করেছে।এটা হয়ত সে মেনে নিতে পারে নি।কিছু সময় যেতেই সে আরেকটু হিংস্র হয়ে উঠল।তার মেজাজটা যেন মাথায় ছড়ে বসেছে।আড়ালে লুকিয়ে থাকা মানুষগুলো কিছুটা ভয় পেয়ে গেল।জোরে জোরে শ্বাস নিতে শুরু করল ওরা তিনজন।কপাল বেয়ে ঘাম পড়ছে।বুকের ভিতরের ধপ্ ধপ্ শুব্দটা আরেকটু বেড়ে গেল।জামাল সাহেবও কিছুটা ভয় পেয়ে গেছেন।তিনি হয়ত এমনটা আশা করেন নি।প্রানিটা ফোঁস ফোঁস শব্দ করছে।ঠিক এমন মূহুর্তে সে আবার আরেকটা চিৎকার দিল।ভয়ার্ত সেই চিৎকার।এমন কর্কশ কন্ঠে চিৎকার শুনলে যে কেউই ভয় পেয়ে যাবে।আর সেটা যদি হাত কয়েক সামনে থেকে আসে তাহলে তাদের অবস্থা কেমন হবে সেটা অনুমান করা কষ্টকর। তার চিৎকার জানান দিচ্ছে যে সে তার মেজাজকে ঠিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।তাই সে আরেকটু এগিয়ে এল।একেবারে গাছটার কাছে দাঁড়িয়ে আছে।এবার হাত বাড়ালেই দেখা মিলবে জামাল সাহেবদের।তবে প্রানিটা গাছটার ঝোপ সরাচ্ছে না।কিছু একটা ভাবছে।সে নিশ্চিত যে এর পাশে কেউ আছে।তবে ঝোপটা সরাতে প্রানিটা কেমন জানি সংকোচ বোধ করছে। জামাল সাহেব আস্তে করে নিজের বাঁহাতটা প্যান্টের বাঁ পকেটে ঢুকালেন। রিভলভারের হাতলটা ধরে বের করবেন ঠিক এমন সময় তারা যে গাছটার আড়ালে ছিল সেটা সরে গেল।একটা প্রানি সেটা উঁচিয়ে ধরেছে।ওরা তিনজন সজোরে চিৎকার দিল।চিৎকার শুনেই ওয়াকিটকির ও পাশ থেকে ভেসে এল কেউ একজনের কন্ঠ। ঠিক মত শোনা যাচ্ছে না।শব্দ গুলো আঁটকে আঁটকে আসছে।বলছে,
"কোন সমস্যা স্যার! হ্যালো! হ্যালো! "
মহি চিৎকার দিয়ে বলে উঠল,
"উই নিড হ্যাল্প! উই আর ইন ডেঞ্জার! ক্যাপ্টেন! আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন!"
ও পাশ থেকে কোন আওয়াজ এল না।সো সো আওয়াজ শুনা গেল মাত্র ।মহির মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল।তার ইচ্ছে করছে ওয়াকিটকিটাকে ভেঙ্গে পেলতে। কিন্তু সে সেটা করল না।ভয় ভয় চোখে প্রানিটার দিকে তাকিয়ে রইল।মাসুদ এবং সাদিকও।কয়েক মূহুর্তের জন্যে ওরা দেশে ফিরে গেল।মা বাবা তথাপি সকল প্রিয়জনদের কথা মনে পড়ে গেল।ভয়ে তাদের কাঁদকাঁদ অবস্থা। প্রানিটা গাছটাকে সরিয়ে তাদের দিকে খুনের নেশায় তাকাল।কিছু সময় পরেই ওদের হাড়ও খুঁজে পাওয়া যাবে না।ঠিক সেই মূহুর্তে জামাল সাহেবের পকেট গলে বেরিয়ে এল একটা রিভলভার। তিনি রিভলভারটা প্রানিটার দিকে তাক করলেন এবং এক সেকেন্ডের জন্যেও অপেক্ষা না করে গুলি করে দিলেন।ঠিক তখনই প্রানিটা মাটিতে পড়ে গেল।মাটিতে পড়েই প্রানিটা গোঙ্গিয়ে উঠল। জামাল সাহেব লক্ষ্য করলেন তিনি বুলেটের বদলে যে তীক্ষ্ণ, সুচালো তীরের ন্যায়, কয়েক ইঞ্চি লম্বা ঘুমের ঔষধ প্রানিটাকে মারলেন সেটা এখনও প্রানিটার দেহে পুরোপুরি যায় নি।তার আগেই প্রানিটা মাটিতে পড়ে গেল।ব্যাপারটা কেমন জানি লাগল জামাল সাহেবের কাছে।এটা তো হওয়ার কথা ছিল না।প্রানিটা এত তাড়াতাড়ি কিভাবে মাটিতে পড়ে গেল? তাকে কিছুটা চিন্তিত দেখাল।তিনি পাশে তাকিয়ে দেখলেন তিন সহকর্মী একটা গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে।তাদের দেখে মনে হচ্ছে তারা হাপ ছেড়ে বাঁচল।কোন একটা বড়সড় বিপদ তাদের উপর দিয়ে বয়ে গেল।তারা জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে।স্বস্তির নিঃশ্বাস।জামাল সাহেব তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন,
"তোমরা ঠিক আছ তো?"
সাদিক জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে বলল,
"জি স্যার! উই আর আল রাইট! "
হঠাৎ তারা আবারো কিছু একটার আওয়াজ শুনতে পেলেন।খচ্ খচ্ শব্দ করে ওদের দিকে এগিয়ে আসছে।একটা শব্দ না।অনেকগুলো শব্দ।অনেক গুলো পায়ের শব্দ তাদের দিকে এগিয়ে আসছে।তাদের প্রতিটা পদে পদে অস্থিরতা প্রকাশ পাচ্ছে।জামাল সাহেবের বুঝতে কষ্ট হল না কি হতে যাচ্ছে।তিনি ওদের দিকে তাকিয়ে বললেন,
"তোমরা ওই প্রানিটাকে তুলে নভোযানটির দিকে চলে যাও।কুইক! আমি তোমাদের পিছনে আছি।"
ওরা তখনও ঠিক বুঝতে পারল না তাদের স্যার কি বলছেন।তারা ভাবছে,'স্যার কি পাগল হয়ে গেল নাকি?' তবে কিছু বলল না।স্যারের কথা মান্য করতে হবে।তাই তারা তিনজনে মিলে প্রানিটাকে কোলে তুলে নিল।দৌড়াতে লাগল যানটির দিকে।তাদের পিছন পিছন আসছেন জামাল সাহেব।তার হাতে একটা রিভলভার দেখা যাচ্ছে।
.
শব্দ গুলো আরো কাছে চলে এল।জামাল সাহেবরা যখন খোলা মাঠটায় পৌঁছাল তখন পিছন থেকে অদ্ভুত চিৎকার ভেসে আসতে লাগল।ঠিক যেমনটা ওই প্রানিটা করেছিল।জামাল সাহেব একটু পিছন ফিরে তাকালেন।দেখলেন অনেক গুলো সবুজ প্রানি দেখা যাচ্ছে এবং তারা হিংস্র দৃষ্টিতে উনাদের দিকে এগিয়ে আসছে।মাসুদরা যে যানে করে এই গ্রহে অবতরণ করেছে তার পাশে চলে গেল।কিন্তু জামাল সাহেব একটু পিছিয়ে পড়লেন।তবুও তিনি প্রানপনে দৌড়ে আসছিলেন।ঠিক তখনই একটা সবুজ প্রানি উনার খুব কাছে চলে এল।অনেকটাই কাছে! জামাল সাহেব পিছন ফিরে তাকানোর চেষ্টা করছেন না।তার এখন একটাই লক্ষ্য! কি ভাবে ওই যানটির কাছে যাওয়া যায়।প্রানিটা জামাল সাহেবের একেবারে কাছে চলে এল।এই উনার ঘাড়ে হাত দিবে বলে। হঠাৎ-ই প্রানিটা তার মুভমেন্ট চেঞ্জ করল।দৌড়ের গতি কমিয়ে দিল।ততক্ষনে মাসুদরা মৃত প্রানিটাকে নিয়ে যানটিতে উঠে গেছে।শুধু রয়ে গেলেন জামাল সাহেব।দৌড়ের গতি কমিয়ে প্রানিটা ঝাপ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।সে যদি ঠিকঠাক ভাবে ঝাপ দেয় তাহলে সে অবশ্যই জামাল সাহেবকে ধরে পেলবে।সে ঠিক তাই করল।খুব জোরে একটা চিৎকার দিয়ে একটা ঝাপ দিল।ঠিক তখনই ঠাশ্ ঠাশ্ করে দুটি শব্দ হল।"দ্যা গ্রিন ওয়ার্ল্ড" সম্পুর্ন কেঁপে উঠল।জামাল সাহেব সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলেন নভোযানটির ভিতরে রিভলভার হাতে দাঁড়িয়ে আছে সাদিক।ওর রিভলভার থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।জামাল সাহেব একটু পিছন ফিরে তাকালেন।দেখলেন সবুজ প্রানিটির নিথর দেহ মাটিতে পড়ে আছে।এর কিছু দুরে দেখা যাচ্ছে দল বেঁধে অনেক গুলো প্রানি তার দিকে এগিয়ে আসছে।তাদের চোখে খুনের নেশ স্পষ্ট।জামাল সাহেব আর এক মূহুর্তও দাঁড়ালেন না।দৌড়ে চলে যেতে লাগলেন যানটির দিকে।যেটাতে করে তারা এই অচেনা গ্রহে এসেছেন।খট্ খট্ আওয়াজ করেই যানটি রওনা হল রকেটের দিকে।
.
চলবে...
.
দুঃখিত। আসলে এইট প্রথম একটা সাইন্স ফিকশন লেখা আমার।ভুল আর অপূর্নতায় ভরপুর গল্পটা।আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
.
ভুলত্রুটি মার্জনীয়
-তাসফি আহমেদ
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url