Bangla Golpo: গ্রিন ম্যান শেষ পর্ব

বাংলা গল্প| Bangla Love Stories| Bangla Choto Golpo | Bangla Valobashar Golpo| Bangla Golpo.


Bangla Golpo: গ্রিন ম্যান

শেষ পর্ব
.
জামাল সাহেব নিজের ল্যবে ঢুকেই দেখলেন উনার তিন সহকর্মী গম্ভির হয়ে আছে|তিনি ওদের সামনে গিয়েই বললেন,
"কি হয়েছে? তোমরা এভাবে দাঁড়িয়ে আছ যে?" সাদিক বলে উঠল,
"স্যার আপনি যে রিপোর্ট ফাইলটা দিয়েছেন সেটা উধাও গিয়েছে|ওটা কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি|ইভেন এই আবিষ্কারের পিছনে যে সকল বিনি রয়েছে সেই লিষ্ট থেকে আপনার নাম মুছে পেলা হয়েছে|এসব ওই ষ্টিফানেরই কাজ|এখানে আসার পর থেকেই দেখছি ওই ষ্টিফান-কে|আপনার পিছন সারাদিন হাত ধুয়ে পড়ে থাকে|"
এসব শুনার পর জামাল সাহেবকে একটু চিন্তিত দেখাল|চিন্তিত ভাব কাটিয়ে হুট করেই জামাল সাহেব হেসে দিলেন|তিন সহকর্মী স্যারের এমন হাসি দেখে ভীষন অবাক হল|
অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল স্যারের দিকে|জামাল সাহেব বললেন,"চিন্তার কি আছে|আমার কাছে মূল কপি আছে|আমি এতটা বোকা নই যে ওদের মূল কপি দিয়ে দিব|আর লিষ্টের কথা বলছ না! ওটা আমি ইচ্ছে করেই করেছি|যাতে শত্রু পক্ষ আমার উপর নতুন করে কোন আক্রমন না করে|তাই নিজের নামটা আপাতত সরিয়ে ফেললাম|তবে এখানকার কেউ একজন যে আমার পিছন পড়েছে সেটা আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি|সে রহস্য না হয় পরেই উন্মেচন করব|আগে এ দিকটা সামলাই|কি বল?" ওরা তিন জন চুপ করে থাকল কেবল|স্যারের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল|অথচ এই ব্যাপারটার জন্যে ওদের কতটা চিন্তিত হতে হয়েছে সেটা ওরা ছাড়া আর কেউই জানে না|জামাল সাহেব ওদের এ অবস্থা দেখে বললেন,"কি ব্যাপার! তোমাদের আবার কি হল?এভাবে তাকিয়ে আছ যে?"মহি বলল,
"কই! না তো! কিছু না স্যার।"
জামাল সাহেব বললেন,
"তা এত জরুরি তলব করলে যে? কি হয়েছে বল তো!"
পাশ থেকে মসুদ বলে উঠল,
"ও হ্যাঁ। চলুন স্যার।আপনাকে একটা জিনিস দেখাই।"
"হুম! চল।"
উনি এবং ওরা তিন জন একটা কম্পিটারের সামনে গেল।না! একটা না! বেশ ক'টা কম্পিটার এখানে।যা দ্বারা 'দ্যা গ্রিন ওয়ার্ল্ড' গ্রহের তাৎক্ষণিক খবর খুব সহজেই পাওয়া যায়।মাসুদ বলল,
"স্যার গ্রহটাতে কাল রাত বারোটায় একটা নিম্নচাপ দেখা দেয়।তারপরেই একটা অদ্ভুত কান্ড ঘটে।নিম্নচাপের ফলে হুট করেই গ্রহটার আয়তন কমে যায়।"
জামাল সাহেব অস্থির গলায় বললেন,
"মানে? কি বলছ তুমি।"
"জি স্যার।এই দেখুন।"
এই বলে মাসুদ জামাল সাহেবকে কিছু একটা দেখাল।যেখানে গ্রহটার দুটি চিত্র পাশাপাশি রাখা।একটা কিছুদিন আগের। আর অন্যটা নিম্নচাপের পর।দেখা যাচ্ছে দুটি গোলক।যা দেখতে অনেকটাই ডিমের মত।তবে এই দুই চিত্রের পার্থক্যটা খুব সহজে বুঝা যায় না।একটু সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকালে বুঝা যাবে।এটা প্রাথমিক ভাবেই বুঝা যায়।তবে কম্পিটারে দ্বারা খুব সহজেই দুই চিত্রে পার্থক্য বুঝা যাবে।জামাল সাহেব অস্থির দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে থাকলেন। উনার চোখ দেখে বুঝা যাচ্ছে উনি ভীষন অবাক হয়েছেন।তবে এমন কিছু যে হবে সেটা তিনি আগেই জানতেন।জামাল সাহেব বললেন,
"ছবি দুটি এবং গ্রহটার আয়তনের সঠিক পরিবর্তন বের করে আমাকে দাও।কুইক! "
মাসুদ আদেশ পেতেই কাজে লেগে পড়ল।
.
"স্যার! ফাইলটার কোন খবর পেলেন।"
জামাল সাহেব কথাটা উইন ক্লার্ক-কে বললেন।উইন ক্লার্ক খবরের কাগজের দিকে তাকিয়ে বললেন,
"নাহ্! অনেক খুঁজেছি।বাট পাই নি।"
"আচ্ছা।সে না হয় পরে দেখা যাবে।কিন্তু স্যার ওই গ্রহে যাওয়ার কি কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে? "
"নাহ্! এখান থেকে কোন রকেট আর ওই গ্রহে যাবে না।"
"কেন স্যার? গেলে ক্ষতি কি? "
ক্লার্ক সাহেবকে দেখে বুঝা যাচ্ছে তিনি একটু এএকটু রেগে যাচ্ছেন।রাগত স্বরে বললেন,
"অনেক ক্ষতি আছে।যাবে না বলছি যাবে না।ব্যস! "
"কিন্তু স্যার! ওই গ্রহে যাওয়াটা খুব জরুরি।আমাদের জিবন হুমকির সম্মুখীন স্যার।"
উইন ক্লার্ক একটু জোরে রাগও স্বরে বললেন,
"নিকুচি মারি তোমার জিবনের।তোমার জিবন গেলে আমি আরো খুশি হতাম। কি ভাগ্য তোমার।বারবার মারতে চেয়েও তোমাকে মারতে পারি নি।"
"মানে? স্যার আপনি? আপনিই আমাকে মারতে লোক পাঠিয়েছেন? "
"হ্যাঁ! আমিই পাঠিয়েছি।কারন তুমি মরলেই আমি শান্তি পাব।একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারব।"
"কিন্তু স্যার! স্যার আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি যে আপনি আমাকে মারতে চাইছেন?"
"কি কর নি সেটা বল।এই তোমার জন্যে আজ আমি আমার এই চেয়ার হারাতে চলেছি।আমি আমার ক্ষমতা হারাতে চলেছি।"
"ছি! ছি স্যার।তাই বলে আপনি এত জঘন্যতম কাজ করবেন?আমাকে বললেই তো পারতেন।আমি নিজ থেকে সরে যেতাম।একটু ক্ষমতা পাওয়ার জন্যে আপনি আমার সাথে এমন করতে পারলেন? অথচ আমি আপনাকে কত ভালো জানতাম।কত বিশ্বাস করতাম।ছি স্যার।ছি! "
এই বলে জামাল সাহেব উঠে দাঁড়ালেন এবং হনহন করে উইন ক্লার্ক এর কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলেন। উইন ক্লার্ক বোকার মত দেখে গেলেন কেবল।কিছু বললেন না।
.
জামাল সাহেব নাসা হতে চলে যাবেন এটা শুনেই নাসার মাঝে এক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।কেউ ঠিক মেনে নিতে পারছে না।সবাই বেশ চিন্তিত। কি এমন হয়েছে সে জামাল সাহেব একেবারে নাসা হতে চলেই যাবেন? জামাল সাহেব বসে আছেন।তার সামনে বসে আছে উনার তিন সহকর্মী! ওরাও নির্বাব হয়ে আছে।কিছু বলছে না।হঠাৎ-ই মাসুদ বলে উঠল,
"যাকে এত বেশি বিশ্বাস করতাম সেই আজ বসে বসে আমাদের মৃত্যুর ফাঁদ পাতছে।আহহ! কি দুনিয়ারে! মানুষ এত বিবৎস হয় কি করে।ছি! "
সাদিক বলে উঠল,
"এই সাদা চামড়ার মানুষগুলোই মনে হয় এমন হয়।অন্যের অর্জন দেখতে পারে না।"
আর কেউ কোন কথা বলল না।সবাই চুপ হয়ে আছে।জামাল সাহেব বেশ অবাক হচ্ছেন।আবার খুশিও হচ্ছেন যখন জানতে পেরেছেন নতুন বছরের শুরুতেই উনাকে নাসার শ্রেষ্ঠ এবং প্রধান বিজ্ঞানী হিসেবে ঘোষনা করা হবে।কিন্তু এই অর্জনটা যে উনার জীবন মরন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কথাটা ভাবতেই জামাল সাহেবের খারাপ লেগে উঠল।উনার স্ত্রী আর সন্তানদের নিষ্পাপ চেহারা উনার চোখের উপর ভাসতে লাগল।আজ যদি উনার কিছু হয়ে যায় তাহলে? তাহলে ওরা কি নিয়ে বাঁচবে? জামাল সাহেব বেশ চিন্তায় পড়ে গেলেন।উনাকে যে করেই হোক এখান থেকে চলে যেতে হবে।উনাকে বাঁচতে হবে।অন্তত উনার সন্তানদের জন্যে।
.
জামাল সাহেবের কেবিনে একটা থমথমে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।সবাই নিস্তব্ধ,নিশ্চুপ হয়ে আছে। এমন সময় দরজায় টোকা পড়ল।জামাল সাহেব বললেন,
"কে? "
ওপাশ থেকে আওয়াজ এল,
"ভিতরে আসতে পারি? "
আওয়াজটা কেন জানি চেনাচেনা লাগছে।তবে জামাল সাহেব ঠিক ধরতে পারছেন না।বললেন,
"জি! আসুন। "
সবাই দরজার দিকে তাকিয়ে আছে।এমন সময় দরজা খুলে প্রবেশ করল নাসার বর্তমান প্রশাসক 'রবার্ট ম্যাক'।জামাল সাহেব সহ তিন সহকর্মী উনাকে দেখতেই উঠে দাঁড়িয়ে গেলেন।অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।উনাকে ঠিক এখানে আশা করে নি কেউ।জামাল সাহেবএকটু এগিয়ে গিয়ে বললেন,
"আরে স্যার আপনি? আমাকে বললেই তো হত।আমি গিয়ে দেখা করে আসতাম।"
ম্যাক একটু হাসলেন।বললেন,
"তার প্রয়োজন হয় নি।তাই চলে এলাম।এখনও হাঁটতে পারি।সমস্যা নেই।"
জামাল সাহেব মৃদু হাসলেন।বললেন,
"প্লিজ স্যার বসুন।এই যে এখানে।প্লিজ! "
ম্যাক বসলেন। বসেই দাঁড়িয়ে থাকা মাসুদদের দিকে তাকিয়ে বললেন,
"হেই ইয়াং বয়েজ! হাউ আর ইউ? "
সাদিক বলল,
"ফাইন স্যার।এবাউট ইউ? "
"ইয়াহ! আই এম অলসো ফাইন।"
জামাল সাহেবের দিকে তাকিয়ে বললেন,
"জামাল সাহেব! আপনার খবর কি?
"এইত ভালো।"
"তা যে জন্যে আসলাম।শুনছি আপনি নাকি চলে যাচ্ছেন? "
"জি স্যার! "
"কেন? কোন সমস্যা হয়েছে? "
"নাহ্ স্যার।কোন সমস্যা হয় নি।"
"হয়েছে! কোন না কোন সমস্যা তো হয়েছেই।তা না হলে আপনি এত সহজে এখান থেকে যাওয়ার পাত্র নন। তাও আবার এত বড় একটা মিশন ফেলে।যেখানে পুরো বিশ্ববাসীর জিবন জড়িত।"
"নাহ্ স্যার।তেমন কিছু না।"
"মিথ্যা বলবেন না প্লিজ।আমি কিন্তু মাইন্ড রিড করতে পারি।নির্ভয়ে বলুন।আমি আপনাকে সাহায্য করব।কথা দিচ্ছি।"
জামাল সাহেব কিছু সময় চুপ করে থাকলেন।তারপর বললেন,
"আসলে স্যার উইন ক্লার্ক..."
জামাল সাহেব পুরো শেষ করতে পারলেন না।তার আগেই উনার কেবিনের লাইট গুলো বন্ধ হয়ে গেল।আবার জ্বলে উঠল। আবার বন্ধ হয়ে গেল।কম্পিটার গুলো জিম জিম করে বন্ধ হয়ে গেল।হুট করেই সব কিছু অন্ধকার হয়ে গেল।উপস্থিত সবাই খুব অবাক হল।জামাল সাহেব বললেন,
"কি ব্যাপার! এমন হচ্ছে কেন? "
ম্যাক বললেন,
"কি হয়েছে আবার।অ্যাই! তোমরা একটু দেখ তো।"
মাসুদদের বললেন কথাটা।ওরা বের হবে এই আগেই বাইরে থেকে চিৎকারের আওয়াজ এল।অনেক গুলো শব্দ শুনা যাচ্ছে।উনারা সবাই কেবিন থেকে বেরিয়ে এলেন।সবাই বাইরে মাঠের সামনে এসে জড় হলেন। দেখলেন একটা চতুর্ভুজের মত প্লেন। হয়ত নভোযান! ওটা উড়ে গিয়ে জঙ্গলের দিকে চলে গেল।তারপর আবার সব ঠিক হয়ে গেল।আলো জ্বলে উঠল।কম্পিটার জ্বলে উঠল। জামাল সাহেব খুব দ্রুত ম্যাককে বললেন,
"স্যার! দ্রুত মিডিয়াকে খবর দিন।"
"কেন? "
"স্যার। ওরা এসে গেছে।আমাদের সাথে যুদ্ধ করার জন্যে চলে এসেছে।"
"কি বলছেন? "
"বেশি কথা বলার সময় নেই স্যার।প্লিজ! দ্রুত করুন।"
"ওকে! ওয়েট।"
.
জামাল সাহেব মিডিয়ার সামনে বলতে লাগলেন,
"আপনারা ইতিমধ্যে ওই প্লেনটা দেখে গেছেন।ওরা এসে গেছে।আমাদের সাথে যুদ্ধ করার জন্যে চলে এসেছে।ওরা এলিয়েন!... "
জামাল সাহেব এত দিনের সব ঘটনা গুলো সংক্ষেপে তুলে ধরলেন। রিপোর্ট গুলো দেখালেন।সবাই বেশ অবাক হচ্ছে এসব দেখে।বক্তব্যের শেষে তিনি বললেন,
"যত সাধারণ মানুষ আছেন তারা প্রত্যেকে নিজের রুমের, বাড়ির আঁটকে ফেলুন।সবাই একসাথে লুকিয়ে পড়ুন। প্রত্যেক দেশের আর্মি,বিডিয়ার তথা যত সামরিক, বেসামরিক বাহিনি আছে সবাই তৈরি থাকুন।নিজের দেশকে বাঁচাতে নিজের জান দিয়ে দিতে কুন্ঠিত বোধ করবেন না।মনে রাখুন ওরা একবার আপনাদের দূর্বল করতে পারলে একেবারে জানে মেরে ফেলবে।দূর্বল হবেন না।নিজেকে শক্ত রাখুন।নিজের দেশকে রক্ষা করুন। এই মহা বিশ্বকে রক্ষা করুন। প্রমান করে দিন 'মানুষই সৃষ্টির সেরা জীব'।"
প্রেস কনফারেন্স শেষ।জামাল সাহেব দ্রুত নিজের কেবিনে গেলেন।উনার তিন সহকর্মীও উনার সাথে চলে গেলেন।গিয়ে টিভিটা ছেড়ে দিলেন।এখনও কোন খবর পাওয়া যায় নি।কেউ কিছুই বলতে পারছে না।একটা থমথমে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। চারিদিকে খুব নিস্তব্ধতা দেখা দিচ্ছে।জামাল সাহেব তাকিয়ে আছেন টিভির দিকে।উনার তিব সহকর্মী ভয় ভয় চোখে তাকিয়ে আছে টিভির দিকে।ওদের চোখ ছলছল করছে।বুকের ধপ্ ধপ্ বেড়ে গেছে কয়েক গুন।আওয়াজ হচ্ছে ভীষণ।এমন সময় হুট করেই জামাল সাহেবের ফোন বেজে উঠল। সাদিক, মাসুদ,মহি তিনজনই কেঁপে উঠল।জামাল সাহেব ফোন হাতে নিয়ে একটু আড়াল হলেন।ফোন ধরলেন।ওপাশ থেকে মিসেস অর্পার কান্নার আওয়াজ ভেসে এল।চাপা স্বরে কান্না করছেন।জামাল সাহেব বললেন,
"কি ব্যাপার! কান্না করছ কেন? "
"তুমি প্লিজ চলে এস।আমার ভীষণ ভয় করছে।"
"এমন করে না প্লিজ একটু শক্ত হও।আমি চলে আসব।আমি আসা পর্যন্ত নিজেকে ঠিক রাখ প্লিজ!"
"আমি পারছি না।তুমি চলে আস প্লিজ।তুমি চলে আস।"
"আসব।আগে তুমি নিজেকে ঠিক কর।শক্ত হও।আমি আছি তোমার সাথে অর্পা।"
মিসেস অর্পা কিছু বললেন না।চুপ করে থাকলেন।উনার ফুঁফিয়ে কান্নার আওয়াজ আসছে।জামাল সাহেব বললেন,
"বাবুরা কই? "
"ঘুমাচ্ছে"
"শুন! ওদের দিয়ে একটা রুমে ঢুকে যাও।তালা মেরে দিও।দারওয়ানকে বলিও গেইট এ তালা মারতে। আমাদের প্রতিটা রুমে রুমে তালা মেরে দিও।এত তালা আছে? "
"না! নেই। "
"যা আছে সেগুলো মেরে দিও।দারওয়ানকে বলিও তালা নিয়ে আসতে।ওকে ছুটি দিয়ে দিও বা তোমাদের সাথে রেখে দিও।"
ওপাশ থেকে কোন আওয়াজ এল না কিছুক্ষন।একটু সময় নিয়ে মিসেস অর্পা বললেন,
"ফোন রাখবা না প্লিজ। তোমার সাথে কথা বললে একটু সাহস জমা হয় হৃদয়ে। "
"আচ্ছা..."
হঠাৎ ই সাদিক ডেকে উঠল। বলল,
"স্যার! জলদি আসুন।"
জামাল সাহেব ফোনে বললেন,
"রাখ।পরে ফোন করছি।"
ওপাশের কথার অপেক্ষা করলেন না।কলকেটে দিলেন।দৌড়ে গেলেন। উনাকে দেখতেই মহি ভিত চোখে বলল,
"দেখুন স্যার।কি হচ্ছে। "
জামাল সাহেব টিভির দিকে তাকালেন।দেখলেন সেই সবুজ প্রানি গুলোকে। গাছ উপড়ে ফেলে দিচ্ছে। বাড়ি ঘর ভেঙ্গে দিচ্ছে।যাকে সামনে পাচ্ছে তাকেই মেরে ফেলছে।ওদের হাতে ধারালো কিছু দেখা যাচ্ছে।যা দ্বারা ওরা মানুষের শরির হতে মাথা কেটে ফেলছে।হুট করেই একটা প্রানি ক্যামেরার দিকে এগিয়ে এল।ক্যামেরা ম্যান নিশ্চই এতক্ষণ লুকিয়ে লুকিয়ে ছবি তুলছিল।ওকে দেখতে পেয়েই এগিয়ে এল। ক্যামেরা ম্যান দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছে।কিন্তু তার আগেই প্রানিটা ওকে ধরে ফেলে।কিছু দেখা যাচ্ছে না আর।এমন সময় তিব্র আর্তনাদ শুনা গেল।ককিয়ে উঠল কেউ।ক্যামেরা ম্যানকে মেরে ফেলেছে দানবটা।জামাল সাহেব আনমনে বলে উঠলে,
"ও মাই গড।"
এমন সময় জামাল সাহেবের ফোব বেজে উঠল। ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে শুনা গেল ম্যাকের গলার আওয়াজ।ম্যাক বললেন,
"নিউ ইয়র্ক আক্রমণ হয়েছে।সামরিক বেসামরিক সবাই ব্যার্থ হচ্ছে।কিছু একটা করুন প্লিজ। তা না হলে সব ধ্বংস হয়ে যাবে প্লিজ।"
"ওকে স্যার।আমি দেখছি কি করা যায়।"
.
মহাকাশকে আলোড়িত করে আরো দুটি প্লেন এই বিশ্বে নেমে আসল।সেখান থেকে এক এক করে নামতে থাকল এক এক করে সবুজ বর্নের দানবিয় প্রানি গুলো।ওদের হাতে ধারালো কিছু একটা দেখা যাচ্ছে।দৌড়ে যাচ্ছা।ভাঙচুর করছে।যাকে সামনে পাচ্ছে শরির হতে মাথা আলাদা করছে।বস্তির মানুষগুলোকে, ফুটপাতের উপর বসে থাকা বাসস্থানহীন মানুষ গুলো আজ লাশ হয়ে পড়ে আছে।কার লাস কোনটা সেটা সনাক্ত করা যাচ্ছে না।কারন কারো মাথা নেই।আহহ! কি বিবৎস ভাবে মারছে মানুষ গুলোকে।এরপর আরো দুটি প্লেন নেমে এল।নানা রকম ভাবে ওদের মেরে ফেলার চেষ্টা করছে।এক মাত্র পথ হল আকাশ পথ যা দ্বারা ওদের মেরে ফেলা সহজ হবে।তাই করা হল।কিন্তু অদ্ভুত ভাবে প্রানি গুলো যখন দেখল ওদের আকাশ পথে আক্রমণ করা হচ্চে তখন তারা একটা অদ্ভুত অস্র বের করল।অস্র হতে এক প্রকার লাইটের আলোর মত কিছু একটা বের হচ্ছে। যা যুদ্ধ বিমানের উপর লাগতেই যুদ্ধবিমানটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।জ্বলে যাচ্ছে একেবারে।বোমা ফেলা হচ্ছে।তবে এতে নগর বাসির উপর ঝুঁকি বেশি। 
জামাল সাহেবের চোখটা হুট করেই গেল মৃত্যু প্রানিটার দিকে।যাকে প্রিজার্ব করে রাখা হয়েছে। সেই সবুজ প্রানিটা। হঠাৎ-ই জামাল সাহেবের একটা কথা মনে পড়ে গেল।প্রানিটা মৃত্যুর কারন তিনি জানেন না।তিনি একটু চিন্তিত ভঙ্গিতে বলে উঠল,
"সাদিক! এই প্রানিটার মৃত্যর কারনটা জানতে পেরেছ? "
সাদিক পিছন থেকে বলে উঠল,
"জি স্যার! তবে ক্যামিক্যালটার নাম আমি জানি না।কোন বইতেও নেই।তবে এটা নিশ্চিত যে প্রানিটার নাকে ওই গ্রানটা লাগা মাত্রই প্রানিটা মারা যায়।ওর সকল কোষ নষ্ট হয়ে যায় কয়েক সেকেন্ডে। শ্বাস চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে।রক্তচাপ বেড়ে যায়।"
জামাল সাহেব কিছু একটা চিন্তা করলেন।তার চিন্তা গুলো এরূপ"কিছু একটার গ্রান লেগেছে।কয়েক সেকেন্ডে কোষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।তার মানে প্রানিটা এর আগে গ্রানটা নেয় নি।ঝোপটা উঠানোর কিছুক্ষণ পরেই প্রানিটা মাটিতে পড়ে যায়।তারমানে ঝোপেই কিছু ছিল।কি ছিল! ফুল! আরে ওখানে তো ফুল ছিল। তাহলে কি ওই ফুল গুলোই? "
জামাল সাহেব দৌড়ে প্রিজার্ব করা ফুলটার কাছে গেলেন।ফুলটা হাতে দৌড়ে গেলেন সাদিকের কাছে।ওরা জামাল সাহেবের এই অবস্থা দেখে কিছুটা অবাক হচ্ছে।জামাল সাহেব সাদিককে বললেন,
"এই ফুলটা পরিক্ষা কর।আমি নিশ্চিত এটাই ওই প্রানিটাকে মেরেছে।"
সাদিক ফুলটা হাতে নিল।কি কড়া গ্রান ফুলটার! ফুলটা হাতে নিতেই পুরো রুম গ্রানে ভরে গেল।সাদিক ফুলটা নিয়ে গেল।ওর সাথে গেল মাসুদ ও মহি।জামাল সাহেব বললেন,
"খুব তাড়াতাড়ি কর।" 
"জি স্যার।"
ওরা চলে গেল।জামাল সাহেব ম্যাক কে ফোন করলেন।ফোন ধরতেই জামাল সাহেব বললেন,
"স্যার! একজন কেমিস্ট্রির দক্ষ বিজ্ঞানি চাই।ইমিডিয়েটলি।"
"কেন? কেমিস্ট্রি বিজ্ঞানি লাগবে কেন? "
"যা বলছি তা করেন প্লিজ।"
"ওকে।অপেক্ষা করুন প্লিজ।"
"ওকে"
টু টু শব্দ করে ফোনটা কাটা গেল।জামাল সাহেব একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।
.
সাদিক আশ্চর্য হয়ে বলল,
"স্যার! এই ফুলের যেই গ্রান আর প্রানিটা যেই ক্যামিক্যালের গ্রানের কারনে মারা গিয়েছে দুটোই এক স্যার।দুটোই ম্যাচ করছে।"
জামাল সাহেব যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলেন।একটা হাসি দিলেন।বললেন,
"ইয়েস! আমরা পেয়ে গেছি।"
ওরা তিনজন কিছু বলল না।কেবল স্বস্তির হাসি দিল একটা।জামাল সাহেব দৌড়ে গিয়ে ওদের জড়িয়ে ধরলেন। অনেকটা আবেগাইত হয়ে গিয়েছেন তিনি।এমন সময় দরজায় টোকা পড়ল।দরজা ঠেলে রুমে ঢুকলেন বর্তমান কেমিস্ট্রির জনক 'স্যার জন লুথার কিং'।জামাল সাহেব যেন আরেকটা চিন্তা হতে মুক্তি পেলেন।তিন সহকর্মী অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল জন লুথার কিং এর দিকে। জামাল সাহেব বললেন,
"চল।কাজে নেমে পড়ি।"
মহি বলে উঠল,
"একটু অপেক্ষা করুন স্যার।"
এই বলে ও দৌড়ে নিজের রুমে গেল। ওর পিছন পিছন সাদিক ও মাসুদ দৌড়ে গেল।কিছু সময় পর ওরা ফিরে এল একটা ফুল নিয়ে।যার পাপড়ি গুলোর উপরের অংশ লালা এবং নিচের অংশ ধপধপে সাদা।জামাল সাহেব একটু অবাক হলেন।বললেন,
"তোমরাও এই ফুল এনেছ?"
"জি স্যার।"
"কেন এনেছ বল তো?"
সাদিক আমতা আমতা করতে করতে বলল,
"ইয়ে মানে স্যার..."
"স্পেশাল কারো জন্যে?"
"জি স্যার।তেমন কিছুই।"
"আমি দুঃখিত যে ফুলটা আমাকে নিতে হবে এখন।তবে যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমার ধন্যবাদ দিবে ওদের।ওকে? "
মহি লজ্জায় লাল হয়ে বলল,
"জি স্যার।"
সবার মুখে হাসি।শুধু লুথার কিং ছাড়া।তিনি এসেই অবাক হয়ে এদের কান্ড দেখে যাচ্ছেন।কিছু বলছেন না।তিনি গম্ভির হয়ে থাকলেন।
জামাল সাহেবের ফোন বেজে উঠল।অর্পা ফোন করেছে।অর্পা বলল,
"কি ব্যাপার ফোন দাও নি যে?"
"একটু ব্যাস্ত ছিলাম।"
"তুমি জানো ওরা বাংলাদেশের উপর আক্রমন করেছে।"
"কি বল।তাই নাকি? "
জামাল সাহেব একটু আঁৎকে উঠলেনন।অজানা ভয় ঢুকে গেল মনে।বললেন,
"ভয় পেয় না।আমি ওদের মারার অস্র পেয়ে গিয়েছি।"
এই বলে ফোন কেটে দিলেন।অপাশের উত্তরের অপেক্ষা করলেন না।
.
প্রায় চার ঘন্টা পর জামাল বাহিনী ল্যাব হতে বের হলেন।আবিষ্কার করলেন একটা স্প্রে। যার গ্রান নাকে লাগতেই মরা যাবে সব সবুজ প্রানি।ওরা সবাই খুশি। বেশ ক'টা স্প্রের বতল তৈরি করলেন।বেশ কয়েকটা বোমাও তৈরি করলেন।ছোট রকেটের মত একটা জাহাজ তৈরি করলেন।যা দুই ফুট লম্বা।এগুলো ফাটলে খুব তাড়াতাড়ি চারপাশে ছড়িয়ে পড়বে।এর ব্যাপনের হার খুব বেশি।
জামাল সাহেব খুব তাড়াতাড়ি ম্যাককে ফোন করলেন। ফোন করে বললেন,
"আর্মির ক্যাপ্টেন কে ফোন দিয়ে এখানে ডাকুন।কথা আছে।"
ম্যাক কিছুই বুঝলেন না।কি বলছে এই জামাল।উনি কিছুটা বিরক্ত বোধ করলেন। তবুও নিজেকে সংযত রেখে বললেন,
"ওকে।"প্রায় ত্রিশ মিনিট পার হয়ে গেল।ক্যাপ্টেন এখনও এলেন না।এমন সময় একটা আওয়াজ শুনা গেল কোন দানবের আওয়াজ।খুব পরিচিত জামাল সাহেবের কাছে।জামাল সাহেব সহ ওরা সবাই রুম থেকে বের হলেন।দেখলেন কয়েকটা সবুজ প্রানি বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।ওদের সবুজ গায়ে লাল রক্ত লেগে আছে।জামাল সাহেব লক্ষ্য করলেন যে ওদের সামনে একটা লাশ দেখা যাচ্চে।একটু ভালো করে লক্ষ্য করতেই দেখলেন উইন ক্লার্কের কোট পরিহিত দেহটা।জামাল সাহেব বেশ অবাক হলেন।এমন সময় একটা প্রানি এগিয়ে এসে ক্লার্কের শরির হতে মাথা আলাদা করে ফেলল।জামাল সাহেব চিৎকার দিয়ে উঠল। ওরা দেখে ফেলল জামাল সাহেব ও উনার সঙ্গিদেরকে।দেখতেই একটা গর্জন দিল প্রানি গুলো।তারপর এগিয়ে এল জামাল সাহেবদের দিকে।জামাল সাহেব হাতে থাকা স্প্রে টা একটু স্প্রে করব দিলেন। ঘ্রানটা পেতেই দাঁড়িয়ে গেল প্রানি গুলো।তারপর আস্তে করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।এরপর আর্মির কেপ্টেন আসল।তাকে জামাল সাহেব বুঝিয়ে দিলেন যে বোমা গুলো এক জায়গায় পঠাতে পারলেই হবে।খুব দ্রুত এর গ্রান আসে পাশে ছড়িয়ে পড়বে। শুধু পাঠাতে পারলেই হয়েছে।এই ছোট্ট রকেটের মত জাহাজটা সাগরের স্রোতের মাঝে ছেড়ে দিবেন।একটা সুইচ আছে।ওটা চাপ দিবেন কেবল।তারপরেই ওটা খুব দ্রুত চলতে থাকবে এবং হঠাৎ-ই ফেটে যাবে।পানির সাথে মিশে যাবে ঘ্রাণটা। এতে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে ঘ্রাণটা। আর স্প্রে গুলো হাতে রাখবেন।আশা করি এতেই কাজ হয়ে যাবে।
কেপ্টেনর সাথে কথা বলার পর উনি মিসেস অর্পাকে ফোন দিলেন।কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে তিনি মিসেস অর্পার ফোনটা বন্ধ পান।উনি খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন।ছেলে, মেয়ে আর বউয়ের কথা খুব মনে পড়তে থাকে।তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে দেশে ফিরে যাবেন। এক্ষুনি! 
পরিশেষ :
মিসেস অর্পা দুহাত দিয়ে নিজের বাচ্ছা দুটোকে জড়িয়ে ধরে আছেন।ওরা কান্না করছে।ওদের সামনে দুইটা বড়, বিশাল দেহি প্রানি দাঁড়িয়ে আছে।ওরা দেখতে সবুজ রঙের।মিসেস অর্পা ঠিকই চিনতে পেরেছেন। কারন জামাল সাহেব উনাকে বলেছেন এ সম্পর্কে।প্রানি দুটোর মধ্যে একটা উনাদের দারোয়ান রফিকের গাঢ়টা ভেঙ্গে দিল।রফিক তিব্র চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন।এরপরেই অন্য প্রানিটা ধারালো অস্রোটা দিয়ে রফিকে মাথা কেটে ফেলে দিল শরির থেকে।এ দেখে মিসেস অর্পা খুব জোরে চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠলেন।বাচ্ছা দুটোও কান্না করছে খুব।প্রানি দুটো ফিরে চাইল মিসেস অর্পার দিকে।খুনির নেশায় তাকাল মিসেস অর্পার দিকে।মিসেস অর্পা আরো বেশি ভয় পেয়ে গেলেন।
প্রানি দুটো এগিয়ে এল।খুব কাছে চলে এল। হাত কয়েক দুরে মিসেস অর্পা।প্রানি ডূটো এ সাথে চীৎকার দিল।এতে বাচ্ছা দুটোর কান্না গতি আরো বেড়ে গেল।তীব্র চিৎকার দিয়ে যখন মিসেস অর্পার দিকে আক্রমণ করতে আসবে তখনই তিনি লক্ষ্য করলেন যে একটা প্রানি মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে।চিৎকার করছে খুব।ককিয়ে উঠছে।অন্য কেবল তাকিয়ে থাকল।আস্তে করে পড়ে যাওয়া প্রানিটার কাছে গিয়ে বসল।মাথাউ হাত বুলিয়ে দিল।আবারও তীব্র ভাবে চিৎকার দিল প্রানিটা।মিসেস অর্পার লক্ষ্য করলেন যে প্রানিটা কান্না করছে।দেখতে কেমন জানি অসহায় লাগছে।এর কয়েক সেকেন্ড পরে ওই প্রানিটাও মৃত্যু প্রানিটার পাশে শুয়ে গেল।একটু গোঙ্গাচ্ছে সে।হাত পা নাড়াতে লাগল।কিছু সময় পর সেও নিস্তব্ধ হয়ে গেল।মিসেস অর্পা ভীষণ অবাক হলেন।অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেন।উনিও এক রকম উদ্ভট ঘ্রাণ পাচ্ছেন।কি কড়া সে ঘ্রান ! 
.
জামাল সাহেবকে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হয়েছে।বিশ্বের বিখ্যাত বিজ্ঞানিহিসেবে ঘোষনা করা হয়। ভিবিন্ন পুরস্কারের ভুসিত করা হয় উনাকে।মিসেস অর্পা গর্ভিত চোখে তাকিয়ে দেখেন কেবল।প্রাইজ হাতে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটা দেখেন।ভালো ভাবে পরক্ষ করেন।একটা জিনিস পান তিনি।হুম।লোকটা খুব ভালোবাসে উনাকে।খুব বেশিই ভালোবাসে।
.
ভুলত্রুটি মার্জনীয়
-তাসফি আহমদ
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url