গল্পঃ সে ছিল জেদি। লেখক - তাসফি আহমেদ

গল্পঃ সে ছিল জেদি। লেখক - তাসফি আহমেদ



গল্পঃ সে ছিল জেদি। 


তাসফি আহমেদ



এই গল্পটাও প্রথম দিকের লেখা ! তাই  ভুলভ্রান্তিতে ভরপুর। তাই গল্পটি ভয়াল নাও লাগতে পারে। আপনি চাইলে  আমার  অন্যান্য গল্প গুলো  পড়তে পারেন। এখানে আমার  সকল গল্পের লিংক  রয়েছে। 

 আমার সকল গল্পের লিংক।  


ভার্সিটি  আসলাম ভর্তি হওয়ার  জন্যে। এসেই  আমাকে কিছুটা অবাক হতে হল ।আমি এটা কাকে দেখছি।এ তো  আমারা ক্রাশ। ও এখানে কি করছে?  এখানে কেন আসল?তারপর হুট করেই আমি ওকে হারিয়ে পেলি।এত পোলাপাইন যে ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে পেলেছি মেয়েটাকে। যেহেতু এ কলেজই আসছে,সেহেতু দেখা হবেই।যাই মামা ডাকছে। দেখা করে আসি।
আমি আরাফাত।এবার অনার্স এ এডমিট হব।তাই কলেজ এ আসলাম। এই ইউনিভার্সিটি তে আমার মামা চাকরি করেন।তাই এখানেই এডমিট হতে আসলাম। আর যার সম্পর্কে এতক্ষণ কথা বললাম সে হচ্ছে আমার ক্রাশ। নাম তানহা।ওকে প্রথম দেখি ওর মামার বিয়ে তে।দেখে আমাকে কিছুটা হোচট খেতে হল।অদ্ভুত মায়া খেলা করছিল মেয়েটার চোখে।চেহারাটাও বেশ মায়াবি।একবার না,দুইবার না।বেশ কয়েকবার আমি ওকে লক্ষ্য করলাম।আমি যেদিকেই যাই সেদিকেই তার সাথে দেখা হয়। আমি কিছুটা এড়িয়ে চলতে থাকলাম। প্রেম করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই।কারো প্রেমে পড়ার কথা তো প্রশ্নেই আসে না।তবুও পার পেলাম না।মেয়েটা সে দিনই আমার ভেতর প্রবেশ। যার দরুন তাকে চাইলেই আমি মন থেকে দুর করতে পারছিলাম না।
.
মামার কাছে আসলাম।
-আসসালামুআলাইকুম  মামা কেমন আছেন???
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।এই ভালো।তোমার কি অবস্থা?
-এইত ভাল।
:বাসার সবার কি অবস্থা?
:আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো।
তারপর ভর্তি হলাম।মামার কেবিন থেকে বের হবো এমন সময় দেখি তানহা ডুকতেছে।আমি তো তার দিকে তাকিয়ে আছি। এমন সময় মামা বলল
:আরে তানহা।আসো। আসো।কেমন আছ??
:এইত ভােলা।আপনার কি অবস্থা,?
:এইত ভােলা।কখন আসলে?
:এইত কিছুক্ষণ আগে।
(আমি ওদের কথা শুনতে ছিলাম  আর ভাবতে ছিলাম যে মামা ওকে চিনে কিভাবে। মামার ডাকে হুশ আসল)
:দাড়াও, তোমার সাথে পরিচয় করিয়ে দি।এ হচ্ছে আমার ভাগ্নে। (আমাকে উদ্দেশ্য করে) আর আরাফাত এ হচ্ছে তোমার নিশি খালামনির ছোট মেয়ে তানহা। ও তোমাদের ডিপার্টমেন্ট এ আডমিট হয়েছে।
শেষের কথা টা শুনে আমার নাচতে ইচ্ছা করতেছে।কিন্ত এখানে নাচা যাবে না তাই নিজেকে সামলে হাত বাড়িয়ে দিলাম। এখান থেকে শুরু হয় আমাদের বন্ধুত্ব। আমার দুজনেই খুব ভালো বন্ধু হয়ে যাই।আমি ছিলাম ওর প্রতি খুব  week,আমি বুঝাতে চাচ্ছিলাম যে আমি ওকে কতটা লাভ করি।কিন্তু ও বুঝতে চাচ্ছে না।আমি ভাবলাম বন্ধু যেহেতু হয়েছে সেহেতু ওর আমাকেই ভালোবাসতে হবে। আমি যে ওকে কত স্বপ্ন দেখেছি।আস্তে আস্তে ওর প্রতি আমার ভালোবাসা আরও অনেক বেড়ে গেছে। আমি প্রতি দিন ওর প্রেম এ পড়ি।ওর দুচোখের তাকালেই আমি যেন নিজেকে হারিয়ে পেলি।ও হয়ত আমাকে বুঝতে পারতেছেনা।কিন্ত যে দিন বুঝবে তার পর থেকে আমি ওকে আমার ভালোবসায় ভরিয়ে দিব।ভালোবাসি।আমি আমার পাগলি টা কে অনেক ভালোবাসি।এমন করেই আমি আমার অনুভূতি গুলা আমি আমার ডাইরি তে লিখে রাখতাম। আমি কখনওই আমার অনুভূতি গুলা বাইরে প্রকাশ করতে পারতাম না।আমি এমনই।আমি যে ওকে ভালবাসি এটা শুধু আমার ডাইরি আর আমার জানের দোস্ত শকের জানে।

এভাবেই চলছিল। আমি কখনও আমার অনুভূতি গুলা ওর সামনে প্রকাশ করতে পারতাম না।যে দিন ওর সাথে  আমার পরিচয় হয় সে দিন যে আমি কত খুশি হইচি বলে বুজাতে পারব না।বাড়িতে এসে মুখ লুকিয়ে অনেক হেসে ছিলাম।
আমাদের এ বন্ধুত্ব দেখে মামা ওর আম্মুর সাথে কথা বলেছে।মামা ওর সাথে আমার বিয়ে  ঠিক করে এসেছে। মামা যখন আমাকে এ কথা বলল আমি তো লজ্জায় শেষ।
ভাবছি ওকে বাসর রাতে চমকে দিব।হা হা হা হা নিজের অজান্তেই হেসে পেললাম।আমি আর ভাবতে পারছি না।♥

সেদিন ছিল শনিবার। ওই দিনটি ছিল আমার জিবনের কাল দিন।খুব ভয়ানক দিন ছিল আমার সে দিন।

তামহা এসে আমার পাশে বসে বলল "
ওকে নাকি আমাদের ক্লাসের মেধাবী student ওকে প্রপোজ করেছে। আর ও নাকি আরও আগে থেকে ওকে ভালবাসত।তাই সাথে সাথে ই ও নাকি accept করেছে "
এ কথা শুনে  আমার মাথায় যেন আকাস ভেংগে  পড়ল।আমার মুখ দিয়ে কোন কথা আসছিল না।কি বলব বুজতে পারতেচি না।
আমি ওকে বললাম "শুভ কামনা রইল "
এ কথা বলে চলে আসলাম। আমার এত দিনের সব স্বপ্ন ভেংগে চুরমার হয়ে গেছে।কোন কষ্টে বাড়িতে এসে রুম এ গিয়ে দরজা লক করে বালিশের মাঝে মুখ লুকিয়ে কান্না শুরু করে দিলাম।আমার সব শেষ। এক সেকেন্ড এ আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।
আমি পাগল প্রায়।টানা তিন দিন পানি ছাড়া কিছেই খাই না।মা - বাবা আমাকে নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলেন।এক মাত্র সন্তান আমি তাদের।মামা আসল।আমি মামাকে সব খুলে বললাম।আমি মামার সাথে ফ্রি ছিলাম। তাই বললাম।
ঠিক মতন না খাওয়াতে আমি অসুস্থ হয়ে গেলাম।কেউ আমাকে কিছুই খাওতে পারতেচে না।
খাওয়া যে আমার গলা দিয়ে নামতেছে না।হাসপাতাল এ আডমিট হলাম।সবাই আমাকে দেখতে আসল।কিন্তু তানহা আসল না।
আর আসবেই বা কেন
ও তো অন্য কারও সাথে সুখেই আছে।হয়ত আমাকে ভুলে গেছে।হয়ত আমাকে ভুলে গেছে।যাক ও খুশি থাকলে আমিও খুশি।সুইসাইড করতে গেছিলাম। বাবা- মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আর করলাম না।কি করে ওদের পেলে যাই।
,,
আমি মামা কে বলে দিয়েছি যে ওদের কাউকে যেন খবর না দেয়।তাই মামাও দিল না।
.
প্রায় তিন মাস পর কেম্পাসে আসলাম।ভাবতেছি কিভাবে ওর সামনে ভালো থাকার অভিনয় করব। একা একা হাটতে ছিলাম। তানহা এসে বলল
:কি রে কি অবস্থা?
:এই তো ভালো। তোর??
:এইত ভালো। এত দিন কই ছিলি??
:এইত একটু বেড়াতে  গেছিলাম।
:সরি রে তোকে আমি ফোন পারলাম না।আসলে তানভীর (ওর বিফ এর নাম)  এর সাথে কিভাবে যে টাইম চলে যায় বলতেও পারব না।খুব বিসি ছিলাম।তাই তোকে  জানাতে পারি নি।
ও তানভীর এর গুনগান গাচ্ছে আর আমার বুক টা ফেটে যাচ্ছিল।
তাই ওখান থেকে উঠে চলে আসলাম।
তার পর ওই  শহর ছেড়ে একেবারে চলে আসলাম আমার মা বাবা কে নিয়ে।
আমি বুঝতে পারছি যে আমার পক্ষে ওর সামনে আর অভিনয় করা যাবে না।আমি পারব না।তাই চলে আসলাম।
তানহা ডাইরি টা খুলে পড়তেছে আর কান্না করতেছে।
সেদিন আসলে আরাফাত তাড়াহুড়া করতে গিয়ে  ওর ডাইরি টা পেলে চলে আসল।সেটা তানহা নিয়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিল। ভেবেছিল পরে দিয়ে দিবে।কিন্তু তা আর হল না।তাই আজ সে ফ্রি ছিল। তাই ভাবল ডাইরি  টা খুলে পড়বে।কিন্তু যা পড়ল তাতে ওর কান্না বেড়ে গেল।ডাইরি টা বুকে নিয়ে কান্না করতেছিল আর বলিতেছিল যে "কেন আমাকে এক বার বললি না।বললে কি আমি তোকে খেয়ে পেলতাম।
কিন্তু এখন আর ফিরে যাওয়া সম্ভব না।কারন তানহা আজ বিবাহিত।আরাফাত তানহার পরিবার এর সাথে কথা বলে ওদের বিয়ের বেবস্থা করে।প্রথমে না মানতে চাইলেও আরাফাত এর পিড়াপিড়ি তে রাজি হয়ে গেল
তানহার কান্না শুনে তানভীর রুমে আসল।কান্নার কারন জানতে চাইলে তানহা ওকে সব বলে।এতে তানভীর এর কান্নাও চলে আসে।দুজনেই একে অপর কে জড়িয়ে ধরে কান্না করতেছিল।
তানহা এখন সন্তান সম্ভাবা।
কিছু দিন পর ওদের একটা  পুত্র সন্তান হল এবং তার নাম রাখল আরাফাত। আর আরাফাত এর জন্যে দোয়া করে যেন ভােলা থাকে এবং নতুন কেউ একজন যেন তার জবনে আসে।
আর আরাফাত এর কথা কি বলব।ও এখন নিজেকে নিকটন এর ধোয়ায় আবদ্ধ রাখে।হয়ত কোন একদিন কেউ এক জন আসবে।ওকে নতুন করে ভালবাসতে শিখাবে।।হয়ত বা হয়ত না।



ভুলত্রুটি মার্জনীয়
 (তাসফি আহামেদ)



আমার সব গুলো গল্প পড়ুন এখান থেকে। 



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url