গল্পঃ কল্পনার প্রতিচ্ছবি
মেয়েটা আমার পাশে,ঠিক আমার গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বসে আছে|আমি ওর দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম ।যেন আজ,এই প্রথম মেয়েটাকে দেখছি।অথচ ওর সাথে আমার চার বছরের পথ চলা।এই চার বছরেও মেয়েটাকে দেখার শেষ হয় না।কেবল দেখে যেতেই মন চায়।আমি অবশ্য তাই করি। কিছুক্ষণ পর ও আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলল,
: ওই! এভাবে তাকিয়ে আছ কেন?
আমি কিছু না বলে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।ও কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইল।নিরাবতায় কাটল কিছুক্ষণ। একটু পর মিহিন খানিকটা দুষ্টুমির স্বরে বলল,
:আজিব!আমি জানি আমি খুব সুন্দর।তাই বলে এভাবে তাকিয়ে থাকতে হবে?
এই বলে ও উচ্চ স্বরে হাসতে লাগল।ওর হাসিটা খুব ভালো লাগে আমার কাছে।কি সুন্দর! আমি এবারও কিছু বললাম না।কেবল ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।আমাদের মাঝে আবার কিছুক্ষণ নিরাবতা নেমে আসল।নদীর ঠিক বাঁপাশের দিকটায় খানিকটা উঁচু জায়গায় ছোট একটা বেঞ্চে আমি আর মিহিন বসে আছি।ঠিক নদীর দিকে মুখ করে।খুব বাতাস এখানে।সেই বাতাসে মেয়েটার মাথার দুপাশের অবাধ্য চুল গুলো উড়ছে|কিছু চুল ওর কপালে এসে পড়ছে।একটু পর আবার বাতাস এসে সেগুলো ঠিক করে দিচ্ছে।আবার চুল গুলো কপালে এসে পড়ছে। আমি সেদিকে মহিত হয়ে তাকিয়ে আছি।মেয়েটা সত্যিই খুব সুন্দর। এত বেশি সাজেও না।মুখে একটু ক্রিম,চোখে গাঢ় করে কাজল আর ঠোটে হালকা গোলাপি লিপষ্টিক।এগুলো মিলিয়ে মেয়েটা কে সত্যিই অসাধারণ লাগছিল। ও আবার বলল,
:কি?আমার এলোমেলো চুল গুলো ঠিক করে দিতে মন চাইছে তাই না ?
আমি কিছুটা অবাক হয়ে বললাম,
:তুমি কি ভাবে বুঝলে ?
:বেশি কথা না বলে চুল গুলো ঠিক করে দাও।
এই বলে একটু চাপা হাসি দিল।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে, আস্তে করে ওর কপাল থেকে চুল গুলো সরানোর জন্যে ওর কপালে হাত লাগালাম।ঠিক তখনি ও হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।আমি পাগলের মত ওকে চারপাশে খুঁজলাম।কিন্ত পেলাম না।আবার হারিয়ে গেল।বুকের ভিতর শূন্যতা আবার টের পেলাম।বাপশের ব্যথাটা আবার জেগে উঠল।কেন ও বার বার এসে আমার ব্যথা গুলো জাগিয়ে দেয়।কেন?চলে গেছ যেহেতু একেবারে চলে যাক।কেন আমার অবচেতনে এসে আমার কষ্ট বাড়িয়ে দাও।কেন?কেন তুমি আমার কল্পনায় এসে দেখা দাও।কি দোষ ছিল আমার।কেন আমায় ছেড়ে চলে গেলে।আমার কল্পনায় এসে আমার কষ্ট গুলো বাড়িয়ে দিয়ে খুব মজা পাও তাই না? ছেলেটা কথা গুলো গুন গুন করে বলে আর ক'ফোটা নোনা জল ফেলে|সাথে ক'ফোটা কষ্টও ঝরে।
'
ভুলত্রুটি মার্জনীয়
তাসফি আহমদ