গল্পঃ কষ্ট অতপর সুখ। ১ম অংশ । তাসফি আহমেদ

গল্পঃ কষ্ট। অতপর সুখ।


  ১ম অংশ 

তাসফি আহমেদ

কি এমন ক্ষতি করেছি আমি, যে সবাই আমাকে ছেড়ে চলে যায়?কি দোষ আমার?কেন এমন টাই শুধু আমার সাথেই হয়?আল্লাহ তোমার কাছে আমি আমার এই প্রশ্নগুলোর উত্তর চাই।দেবে কি আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর? কেন কাউকে আপন ভাবলেই সে দুরে সরিয়ে দেয়।কি এমন পাপ করেছি আমি? এগুলোই ভাবতেছে তাসফি। স্থানটি তাসফির প্রিয় যায়গা। আগে প্রায়শই ওকে এখানে দেখা যেত।কিন্তু গত ২ বছরে ও এখানে আসে না।২ বছর আগের কথা মনে পড়তেই ওর বুকের বাম পাশে ব্যথা অনুভব করল।নাহ।ও সেই দিন গুলোর কথা মনে করতে চায় না।এখন ওর এক মাত্র সম্বল, ওর প্রাণ মনি হল নুহা।সবাই ওকে ছেড়ে চলে গেছে।কিন্তু এই ৩ বছরের মেয়েটি ওর বাবাকে ছেড়ে কোথাও যায় নি।তাসফিও ওকে আঁকড়ে ধরে বেছে আছে। নুহার কথা মনে পড়তেই ও ওর পাশে তাকাল।এ কি!!! নুহা নেই ওর পাশে।অবাক হওয়ার চেয়ে সে অনেক ভয় পেল।এক অজানা ভয়ে ওর শরির শিহরিত হয় উঠল।সামনের দিকে তাকাতেই ও দেখল একটা মেয়ে দেখতে একেবারে নুহার মতন।পরক্ষনে ও আবিষ্কার করল ও নুহাই।মেইন রোডের দিকেই যাচ্ছে। তাসফি উঠেই শরিরের সর্বোচ্ছ শক্তি দিয়ে দোড় দিল।কিন্তু আজিব বেপার হল ও ঠিক যেন দোড়াতে পারতেছে না।হাত পা অবস হয় আসছে।ওর মাথা টা চক্কোর দিচ্ছে।চারপাশ যে ঘোলাটে মনে হল।কিছুদুর যেতেই ও মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।জোরে একটা চিৎকার দিল ও।

"নুহাাাাাাাাাাা
াাা।"নুহা ফিরে তাকিয়ে দেখল ওর বাবা মাটিতে পড়ে আছে।এতক্ষনে ও রাস্তার মাঝখান পার হয় গেছে। কিন্তু বাবার ডাক শুনে দৌড়াতে শুরু করল।তাসফি চোখ খুলেই দেখল নুহা ওর দিকে আসছে। আর রাস্তার অপর পাশ থেকে একটা প্রাইভেট কার আসতেছে।আর কিছুই দেখতে পারছে না ও। সব কিছু অন্ধকার হয়ে আসছে।আর কিছুই মনেই নেই।
------------------------+-----
-------------------
আমি ব্রু কুছকে আমার মায়ের দিকে তাকালাম।
কি শুরু করেছ মা।সকাল সকাল এত ডাকা ডাকি শুরু করলা কেন হুম???একটু শান্তিতে ঘুমাতে দিবা না নাকি???
:ওই ওঠ তাড়াতাড়ি।এত ঘুম তোর কোথা থে যে আসে।ওঠ জলদি ওঠ।
:,,,,,,,,,,
:তাসফি তোকে উঠতে বলছি।।।।।।তা না হলে আমি একখনি জুই কে ডাক দিব,,,
আমার চোখ গুলো বড় হয়ে গেল।
একি মা জুই এর কথা জানল কি ভাবে।আসলে জুই হচ্ছে আমার উনি।ইয়ে মানে আসলে আমার জান পাখি আর কি।বাট ও সেটা জানেনা। এখন ও আমার বন্ধু। আমার মনে হয় ও আমাকে লাভ করে।কিন্তু প্রকাশ করে না।
:তু-তু-তু মি কি বলছ যা তা।কে কে জুই হুম।আমি কোন জুই টুই কে চিনি না।।
:কিহ তুই আমাকে চিনচ না?
যা বাবা।এই বঁাস টাই কি বাকি ছিল।ও এখানে কোথা থেকে আসল।
কি যে করি এখন।
:তুই বন্ধু না।বন্ধু নামে কলংক।তোর সাথে আর কথা নেই।আমার সাথে কথা বলতে আসলে তোর হাত পা ভেংগে দিব।
ও চলে গেল।আর আমি নির্বাক হয়ে বিছানায় বসে আছি।
মায়ের কথা মনে হতেই মায়ের দিকে তাকালাম
:মা ও কখন আসল?
:এইত কিছুক্ষণ আগে।
:তুমি আমাকে বলবা না যে ও এসেছে।
:বলার সময় টা পেলাম কই।
জুই টা ও এমন।কথায় কথায় রেগে যায়।
নিচু হয়ে কথা টা ভাবলাম।আবার মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখালাম মুচকি হাঁসছে।
ব্যাপার টা কি।মা হাঁসছে কেন?
:মেয়েটা কে কিন্তু আমার খুব ভাল লেগেছে। আমার ছেলের বউ হলে মন্দ হতো না।
:ধুরর তুমি যে কি বল না।।।।
লজ্জা পেয়ে প্রেশ হতে চলে গেলাম।
মায়ের যেখানে পছন্দ হয়েছে সেখানে বাবা আর কোন কথা বলতে পারবে না।
ইয়াহু।কিযে ভাল লাগতেছে। হঠাৎ মায়ের কন্ঠ
:কি রে বের হবি না নাকি?
:এইত মা আসছি।
জলদি করে যেতে হবে।ওই দিকে আবার মহারানী রেগে আছেন। যাই উনার আবার রাগ ভাংগাতে হবে না।।
..
..
ভার্সিটি যাচ্ছি আর ভাবতেছি ওর রাগ ভাংগামু কেমনে। আচ্ছা আগে যাই।।।।পজিশন বুঝে বুদ্ধি বের করতে হবে।।।
:
:
ওই তো বসে আছে।বেচারির মন টা মনে হয় খারাপ।পুরা মুখটা কালো করে বসে আছে। বাট আমি তো কথাটা সিরিয়াসলি বলি নি।সব কথা এত সিরিয়াসলি নেয় কেন মেয়েটা ।যাই গিয়ে দেখি কি করে।
"
"
"আসুক আজকে দেখামু মজা। কি পেয়েছা টা কি? আমাকে চিনে না? এই জুই কে চিনে না।ওর সাথে আমার বন্ধুত্ব আজ ৩ বছরের। আর সে নাকি আমাকে চিনে না।মাথাটাই গরম করে দিছে।
জুই গুন গুন করে কথা গুলা বলছে আর রাগে ফুঁসছে।
"
খুব রোদ। গরম পরতেছে ভাল করেই। গাছের পাতা গুলো ঝরে পড়ে শুকিয়ে পড়ে আছে। ওই পাতার উপর খচ খচ শব্দ করে কারো পাঁয়ের ধ্বনি শুনা যাচ্ছে। জুই পিছনে পিরে তাকাল। ওই তো আসতেছে লাট সাহেব। দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা।এই বলে উঠে দাড়াল জুই।জুইকে দাঁড়াতে দেখে স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে পড়ল তাসফি। জুই এইদিক ওদিক কি যেন খুজছিল।কাংখিত জিনিস টি পেয়ে গেল।ঘুরে দাড়াল তাসফির দিকে। কি হতে যাচ্ছে এখন সেটাই চিন্তা করছে তাসফি। ব্রেইন এর মধ্যে সার্চ দিয়ে দেখল যেহেতু লাঠি নিয়েছে সেহেতু কাউকে মারবে। অংকের হিসাব আর সকালের কাহিনী মিলে দাঁড়াচ্ছে আমাকে মারবে। মস্তিষ্ক অতি তাড়াতাড়ি তথ্যটা স্নায়ুতন্ত্রে ফেরন করল।স্নায়ুকোষ গুলো আমাকে জানান দিচ্ছে তাসফি ভাই দোড়াও দোড়াও।ওরা খুব উত্তেজিত হয়ে গেছে। ওদের উত্তেজনা দেখে আমার হৃদয় এর হৃদ কম্পন বেড়ে গেল।বুঝলাম অবস্থা বেশি ভাল না।তাই দিলাম দোড়।জুইও আমার পিছনে দোড়াচ্ছে। ভার্সিটির অনেকেই দেখে মজা নিচ্ছে আবার অনেকের এ দিকে খেয়ালও নেই।আমি চিন্তা করতেছি ও এত জোর পেল কই।বাবারে ও দেখি দোড়ের গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে।এত গতি পেল কই।কোথাও যেন শুনেছিলাম যে রাগ বেড়ে গেলে নিজেকে আর কন্ট্রোল রাখা যায় না।কি করছে না করছে তাও মাথায় থাকে না।হয়ত এর জন্যেই ওর এত শক্তি। কিন্ত আমি তো রাগি নি।তাই আমার জোর বৃদ্ধি পাওয়ার কথা প্রশ্নেই আসে না।তাই গোল চক্কোর দিয়ে আবার আগের স্থানে ফিরে আসলাম। নাহ!!! আমি আর পারছি না।তাই বসে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকলাম। মাথাটা কেমন যেন ঘুরছে।হঠাৎ কেউ আমার       শার্ট এর কলার ধরে আমাকে ঘাসের উপর ফেলে দিল।এবার আমার গায়ের উপর উঠে আমার গলা চেপে ধরল।
:কিরে আমাকে চিনিস না,,,?(রাগের মাত্রা টা অতিরিক্ত)
:,,,,,,,,(আমি কিছুই বলতে পারছি না।গলাটা এমন ভাবে চেপে ধরেছে!!!) 
:বল আমাকে চিনিস না,,,?
আমার চোখ বেয়ে পানি পড়াশুরু করেছে। কাসি দিতেও পারছি না।
আমার চোখের পানি দেখে ও কিঞ্চিত ভয় পেয়ে গলাটা ছেড়ে দিল।আবার ওর মুখে বিষন্নতা।এবারের টা ভিন্ন। আমি উঠে বসে কাসি দিতে শুরু করলাম। ও ওর ব্যাগ থেকে আমাকে পানি দিল।আমি পানি গুলো নিমিষেইই শেষ করে পেললাম।এবার ওর চোখে পানি আভাস পেলাম।পরিস্থিতি সামলে আমি বললাম
:চল বাড়ি চল।
ও কিছু বলল না।শুধু আমার দিকে অস্রুসজল চোখে তাকিয়ে হাটছে।
"""
পরেরদিন আর ভার্সিটি যাই নি।গলাটা কেমন যানি বেথ্যা করছে। বিকেল বেলা বের হয়ে কিছু ওষুধ নিয়ে বাসায় আসলাম। বেথ্যাটা একটু বেশিই ছিল।তাই ঘুমিয়ে পড়লাম।ঘুম থেকেই শুনছি যে কেউ আমার পাশে বসে কান্না করতেছে।
(পরের অংশের জন্যে দয়া করে অপেক্ষা করবেন। ধন্যবাদ)

দ্বিতীয় পর্ব।



তাসফি আহমেদ 

আরো গল্প পড়তে এখানে ক্লীক করুনঃ

সকল গল্পের লিংক। 






গল্পঃ কষ্ট অতপর সুখ। ১ম অংশ । তাসফি আহমেদ


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url